বীরভূম: সোমবার তাঁর বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা পেরিয়ে গিপিঠেয়েছিল। সকাল হতেই অনুব্রত বোলপুরের বাড়িতে এলেন এক ‘দূত’। পরনে ব্ল্যাক টিশার্ট, ঘিয়ে রঙের প্যান্ট, পীঠে কালো ব্যাকপ্যাক। টোটোতে এসেছিলেন তিনি। অনুব্রতর বাড়ির দরজায় টোকা দেন। দরজা খুলে কেউ বেরিয়ে আসতেই হাতে ধরিয়ে দেন একটি কাগজ। ফের টোটো চরেই বেরিয়ে যান তিনি। সাতসকালে তাহলে অনুব্রতর বাড়িতে কে এলেন? এদিকে, বুধবারই নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দিয়ে অনুব্রতকে তলব করেছে সিবিআই। সিবিআই দফতর সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হাজিরার নোটিস ই-মেল করা হয়েছে। নোটিসের কপি অনুব্রতর বোলপুরের বাড়িতেও পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, সিবিআই-এরই কোনও প্রতিনিধি এসে অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার নোটিসের হার্ডকপি দিয়ে গিয়েছেন। যদিও অনুব্রতর বাড়ি থেকে এবিষয়ে সম্মতিসূচক কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন করা হয়েছিল ওই ব্যক্তিকেও। তিনি কোনও উত্তরই দেননি।
সোমবার নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল অনুব্রতর। বোলপুর থেকে কলকাতায় এসেছিলেন বটে, তবে অনুব্রতর গন্তব্য ছিল এসএসকেএম। ঘণ্টা দেড়েক ছিলেন অনুব্রত। তাঁর চিকিৎসায় তৈরি হয়েছিল সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। জেনারেল সার্জন দীপ্তেন্দ্র সরকার, কার্ডিওলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ সৌমিত্র ঘোষ, চেস্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সোমনাথ কুণ্ডুর নেতৃত্বে তৈরি ছিল মেডিক্যাল বোর্ড।
সোমবার বেলা ১২.২৫ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালে ঢোকেন অনুব্রত। ঘণ্টা দেড়েক ছিলেন। বেলা ১.৫৩ মিনিটে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা অনুব্রতকে দেখে বেরিয়ে আসেন। চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “অনুব্রত মণ্ডলকে দেখলাম। তাঁকে ভর্তি করানোর প্রয়োজন নেই। মানিসক চাপ আছে বলে দেখে মনে হয়নি।” রিপোর্টেও উল্লেখ নেই যে অনুব্রতকে এখন বিশ্রামে থাকতে পারে।
ফলে মেডিক্যাল রিপোর্টে চাপ বাড়ে অনুব্রতর। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের তলব। ফের অনুব্রতকে তলব করল সিবিআই। তবে বুধবার সাতসকালে অনুব্রতর বাড়িতে টোটোয় কে এলেন, সেটাই এখন বিচার্য।