বীরভূম: এসএসকেএমের পরেও কেন বোলপুরে ফের চেকআপ? কার নির্দেশে কেষ্টর দুয়ারে চিকিৎসক? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। এরই মধ্যে বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিএমওএইচ হিমাদ্রি আরি জানিয়েছেন যে, এই ভাবে কারোর বাড়িতে টিম পাঠাতে হলে অবশ্যই অনুমতির প্রয়োজন হয়। তবে এমন কোনও অনুমতিই অনুব্রতর বাড়িতে মেডিক্যাল টিম পাঠানোর ক্ষেত্রে নেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, “বাকি সুপার বলতে পারবেন তিনি কার নির্দেশে পাঠিয়েছিলেন।”
চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী বলছেন, “সুপারের নির্দেশে কর্ম।” তাঁর কথায়, “আমি আমার ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষ বোলপুর সিয়ান সাব ডিভিশন হাসপাতালে সুপারিনটেনডেন্টের অর্ডার মানতে বাধ্য। ফলে আমাকে সুপার যা বলেছেন, সেই অনুসারে কাজ করেছি। আমি সুপারকে বলেছিলাম, ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। কিন্তু ওঁ বলেছিলেন হাসপাতালে আনার দরকার নেই। বাড়িতে যান।”
তাহলে কি সমস্ত দায় যাচ্ছে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু ওপর? সুপার বলছেন, জেলাশাসকের কার্যালয়ের থেকে ফোন এসেছিল। তাই তিনি চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যেতে বলেছিলেন।
এদিকে, বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ডেপুটি সুপারই জানাচ্ছেন সুপার ছুটিতে রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারীকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন সুপার? উঠছে প্রশ্ন।
যোগাযোগ করা হয়েছিল জেলাশাসকের কার্যালয়ে। সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এর সঙ্গে আমাদের কাউকে জড়াবেন না প্লিজ।”
কিন্তু এই বিষয়টিতে সরব চিকিৎসক সংগঠনগুলি। তাঁদের প্রশ্ন, চিকিৎসকদের উপরে আমলারা কেন চাপ তৈরি করবেন? তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকদের দিয়ে আইনবিরুদ্ধ কাজ করানো হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক কোনও ভাবে বাড়ি গিয়ে রোগী দেখতে পারেন না। তবুও আমলাতান্ত্রিক চাপ তৈরি করে চিকিৎসকদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তাহলে প্রশ্ন, অনুব্রত মণ্ডলকে কি কেউ আড়াল করার চেষ্টা করছেন? গোটা বিষয়টিতে তৈরি হয়েছে চরম জলঘোলা।