বীরভূম: প্রেতপক্ষের অবসানে দেবীপক্ষের সূচনার মাহেন্দ্রক্ষণই মহালয়া। এদিন ভোরে তিল গঙ্গাজলে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে তর্পণ করে বাঙালি। অত্যন্ত পবিত্র এই সকাল। অথচ গতবার এরকমই এক সকালে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র অবাক করেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে। আর এবার একই পথে দেখা গেল মদনের এক সময়ের সতীর্থ যিনি এখন বিজেপিতে সেই অনুপম হাজরাকে। শনিবার বোলপুরে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরাকে দেখা গেল এক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করতে। তৃণমূলের লোগোকে একটি ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে তাতে গাঁদার মালা পরালেন বিজেপি নেতা। আর সেখানে উপস্থিত বোলপুর সাংগঠনিক জেলার দলীয় নেতা-কর্মীদের গলায় তখন, ‘বলো হরি হরি বোল’ ধ্বনি। প্রথমদিকে দলীয় কর্মীরা একটু খাদে ধ্বনি দিচ্ছিলেন। অনুপম বলে ওঠেন, ‘জোরে জোরে বলো’। শ্রাদ্ধে যেভাবে মৃতের ছবি সামনে নানা উপাচার থাকে, এদিন ওই ছবির নীচে তেমনই রাখা ছিল কয়লা, বালি, মাটির গরুও।
অনুপম হাজরা বলেন, “গত ৫-৭ বছর ধরে তৃণমূলের শাসনকালে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এতটাই অত্যাচারিত যে মানসিকভাবে তৃণমূলকে বর্জন করেছে। তবে ভোট লুঠ করে তৃণমূল ক্ষমতায় টিকে আছে। মানুষের মন থেকে যেহেতু তৃণমূল গত হয়েছে, তাই মনে হল তৃণমূলের শ্রাদ্ধ করা দরকার। সে কারণেই তৃণমূলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করছি। খাওয়া দাওয়াও হবে।” যদিও রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “আমি জানি না সে কে।” তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের খোঁচা, “বিজেপি সস্তায় প্রচার চায়। তাই তর্পণ করছে।”
তবে গত বছরও এরকমই এক ছবি ঘিরে বিতর্ক দানা বাধে। বাবুঘাটে দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর ছবি রেখে তাতে মালা পরিয়েছিলেন মদন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “ওনারা বেঁচে থাকুন। সপরিবারে সুস্থ থাকুন। বিজেপির যে অপমৃত্যু ঘটতে চলেছে তাতে আমি আগাম বিজেপির রাজনৈতিক তর্পণ করে গেলাম।” এই ঘটনাকে কদর্য রাজনীতি বলেই তকমা দিয়েছিল ওয়াকিবহাল মহল। এবার সেই সেই একই রাজনীতির পথে দেখা গেল একসময় তৃণমূলের সাংসদ থাকা বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাকে।