বোলপুর: জবরদখল তুলতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। রাজ্যজুড়ে চলছিল উচ্ছেদ অভিযান। রাজপথে নেমেছে বুলডোজার। সরানো হচ্ছে হকারদের। ভেঙে ফেলা হয়েছে হাজারল হাজার ঝুপরি দোকান। যদিও উচ্ছেদ অভিযান শুরু হতে না হতেই তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় দিকে দিকে। রাজনৈতিক মহলেও বাড়তে থাকে চাপানউতোর। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবারই একমাসের জন্য বুলডোজারে না করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হকারদের পুনর্বাসনের কথাও উঠে এসেছে নবান্নের বৈঠকে। কিন্তু, তারপরেও ভিন্ন ছবি দেখা গেল বীরভূমে।
শুক্রবার সকালেও বোলপুর শহরে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে চলল বুলডোজার। মাঠে নামতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। এদিন বোলপুর শহরের চৌরাস্তা মোড় থেকে শান্তিনিকেতন মোড় পর্যন্ত এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় পৌরসভার পক্ষ থেকে। উচ্ছেদ যে হবে সে কথা পৌরসভার পক্ষ থেকে আগাম মাইকিং করে জানিয়েও দেওয়া হয়। তারপর থেকেই তা নিয়ে এলাকায় বাড়ছিল চাপানউতোর। এরইমধ্যে সকালেই এলাকায় শোনা গেল কেন্দ্রীয় বাহিনীর বুটের আওয়াজ। তারপরই দেখা গেল এসে গিয়েছে জেসিবি মেশিন।
বোলপুরের এসডিও অয়ন নাথ বলেন, “সরকারি রাস্তার যে ফুটপাত পাশে থাকা দোকানগুলি অনেক সময় অস্থায়ীভাবে স্ট্রাকচার বানিয়ে তা একেবারে ফুটপাতের উপর তুলে দিয়ে জিনিসপত্র রাখে। জোর করে দখল রেখেছে। সাধারণ পথচারীদের হাঁটাচলায় অসুবিধা হচ্ছে। দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বাড়ছে। ওনাদের রাস্তার উপর থেকে মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। অবৈধ নির্মাণগুলিও সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যাঁদের কাছে স্থায়ী দোকানের বৈধ কাগজ রয়েছে তাও দেখাতে বলা হয়েছে।”
অন্যদিকে এলাকারই এক হকার শেখ গোলাম মোর্তাজা বলছেন, “আমাদের স্থায়ী দোকান। ১৯৯৮ সাল থেকে আছে। এটাই আমাদের উপার্জনের এরমাত্র পথ। এখন যদি এটাও ভেঙে দেয় তাহলে খাব কী আমরা? উচ্ছেদ করার আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক।” প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই বুলডোজার অভিযান নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা গিয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। রীতিমতো হুঙ্কারের সুরে বলেছিলেন, প্রয়োজনে তিনি নিজে বুলডোজারের সামনে দাঁড়াবেন। যদিও এরইমধ্যে হকার পুনর্বাসনের জন্য একমাসের সময়সীমা ধার্য করে দিতে দেখা যায় মমতাকে। তারপরেও বোলপুরের এই উচ্ছদ অভিযানের খবর সামনে আসায় তা নিয়ে বাড়ছে চাপানউতোর।