বোলপুর: বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতার তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হতেই সুর বদলে গেল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারীর। টিভি৯ বাংলাকে তিনি বলেছেন, “কেউ অন্যায় করলে তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত। মানুষের নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকা উচিত। তবেই মেরুদণ্ড সোজা করা চলা যাবে।“ তাঁর বাবা এমনই শিক্ষা তাঁকে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আর এই বক্তব্যের পরই তাঁর ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। দিন দুয়েক আগে তিনিই অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি গিয়ে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করেছিলেন। লিখেছিলেন, তৃণমূল নেতার বেডরেস্টের প্রয়োজনীয়তার কথা। সুপার নির্দেশেই অনুব্রতকে দেখছে গিয়েছিলেন বলেই দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সে দিন কী নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ ছিলেন চন্দ্রনাথ?
‘সুপারের নির্দেশে’ অনুব্রতকে দেখতে গিয়ে সরকারি প্যাড বা প্রেসক্রিপশনের বদলে কেন সাদা কাগজেই লিখেছ দেওয়া হল মেডিক্যাল পরামর্শ? এ বিষয় নিয়ে ওই চন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “আমি এক জন সরকারি কর্মচারী। আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যা নির্দেশ দেবেন, তা শুনতে আমি বাধ্য। আমি সুপারকে বলছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে, উনি বলেছিলেন হাসপাতালে আনার দরকার নেই। বাড়িতে যেতে।”
এ ভাবে কারও বাড়িতে গিয়ে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। চিকিৎসক সংগঠনের কর্তারা। সরকারি নির্দেশেই যদি চন্দ্রনাথ সে দিন গিয়ে থাকেন, তাহলে কেন সরকারি প্যাডে তিনি প্রেসক্রিপশ করলেন না? বীরভূমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের। গোটা বিষয়ে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা মানস গুমটা বলেছেন, “ছুটিতে থেকে কী ভাবে নির্দেশ দিলেন সুপার? তাঁর বদলে যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের অনুমতি দেওয়ার কথা। কোন উপর মহলের নির্দেশে তিনি একজন চিকিৎসককে পাঠালেন এবং বললেন সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করে দাও? সরকারি গাড়ি কেন যাবে না? গিয়ে থাকলে সরকারি কাগজই বা কেন সঙ্গে থাকবে না?”
এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যে চিকিৎসকদের সংগঠন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে একটি চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু এই কাজ করার সময় চন্দ্রনাথের ‘বিবেক’ কি তাঁর বোধের উন্মেষ করেনি? যা দেখা গেল অনুব্রতের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারির পর।