বীরভূম: আজ, সোমবার অনুব্রতর (Anubrata Mondal) খাসতালুকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে সেজে উঠেছে গোটা বোলপুর। প্রতিবারের মতো, এবারও তাঁর সফরের আগে জেলা জুড়ে দলনেত্রীর ছবি, পোস্টার, কাটআউট, ফেস্টুন। সঙ্গে দেখা যাচ্ছে দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Abhishek Banerjee)। তবে মমতার বীরভূম (Birbhum) সফরে কোথাও নেই অনুব্রত মণ্ডলের। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠছে প্রশ্ন। তবে কি জল্পনাই সত্যি? কেষ্টকে ছেঁটে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। নাকি কেষ্টর প্রভাবশালী তকমা মুছতেই এই ব্যবস্থা তৃণমূলের? সূত্রের খবর, এই সফরে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ সরকারডাঙা হেলিপ্যাডে নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর কঙ্কালীতলা মন্দিরে পুজো দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের সঙ্গেও দেখা করতে যেতে পারেন তিনি। রাঙাবিতানে রাতযাপন, পরের দিন তিনি মালদার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বোলপুর ঢোকার মুখেই গেট বানানো হয়েছে। শহর জুড়ে পোস্টার, ব্যানার। কিন্তু কোথাও দেখা যাচ্ছে না বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ছবি। বলাইবাহুল্য যা ব্যতিক্রমী নজির। তা নিয়েই শুরু রাজনৈতিক জল্পনা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, এই মধ্যে থেকে দুটো সমীকরণ বেরিয়ে আসছে। কাদের ওপর তাহলে এই মুহূর্তে রয়েছে জেলা চালানোর দায়িত্ব? অনুব্রত মণ্ডল এই মুহূর্তে জেলে। বিরোধীদের একাংশ অভিযোগ করছিলেন, জেলের ভিতর থেকেই জেলার সংগঠন পরিচালনা করছেন অনুব্রত। এমনকি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়কেও সেই কথা বলতে শোনা গিয়েছে একাধিকবার। কিন্তু বিষয়টা যে সত্যি নয়, তা এদিনের পোস্টার, ব্যানারে বেশ কিছুটা প্রতীয়মান। কারণ যদি তাই হত, নেত্রী, দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের নীচে থাকত তাঁরও ছবি। দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের এক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীর মাধ্যমে আপাতত বীরভূমের সংগঠন চালাচ্ছে তৃণমূল।
এর আগে পাঁচ জনের কোর কমিটি তৈরি হয়েছিল জেলা নেতাদের নিয়ে। জেলার সংগঠনের দায়িত্ব ছিল তাঁদেরই ওপর। কিন্তু বাস্তবে মুখ্যমন্ত্রী যখন বীরভূমে আসছেন, তখন সকল ব্যানার ফেস্টুনে দুজনেরই ছবি দেখা যাচ্ছে। মমতা-অভিষেকের সঙ্গে রয়েছে বিকাশ রায় চৌধুরী ও মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের ছবি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আপাতত বীরভূমের সংগঠনে এই দুজনেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
আরেকটি বিষয়ও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনুব্রতর প্রভাবশালী তকমা কি ছেড়ে ফেলতে চাইছে দল? জেলা তৃণমূলের একাংশ থেকে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই অনুব্রতর থেকে দল দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছে। তাই বিকল্প হিসাবে রাজ্যের এক মন্ত্রী ও জেলা পরিষদের সভাধিপতির ওপর ভরসা রাখছে দল। তাঁদেরকেই জেলার মুখ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ওঁরা দুজনেই অনুব্রতর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁদের মাধ্যমেই নানান কাজ করতেন তিনি। কীভাবে সংগঠন পরিচালনা হত, কীভাবে ভোটের সময়ে দলের রণকৌশল নির্ধারিত হত, তাতে এই দুজনের সম্যক জ্ঞান রয়েছে।