বীরভূম: এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন চলছে বীরভূমে। সম্মেলন উপলক্ষ্যে রামপুরহাট ছফুকোর কাছে এদিন একটি প্রকাশ্য সভা ছিল। সেখানে প্রধান বক্তা হিসাবে ছিলেন এসএফআই নেত্রী দীপ্সিতা ধর। মঞ্চে উঠে শুরু থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে অলআউট অ্যাটাকে নামতে দেখা গেল দীপ্সিতাকে। রাম মন্দির ইস্যুতেও তুলোধনা শুরু করেন। পদ্ম শিবিরকে এক হাত নিয়ে দীপ্সিতা বলতে থাকেন, “সরকারের দায়িত্ব মানুষের অন্ন-কাপড়-বাসস্থানের সংস্থান করা। মন্দির-মসজিদ বানানো সরকারের কাজ নয়। মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা সরকারের কাজ নয়। গত সাড়ে ৯ বছরে দেশে শাসন চলেছে তাতে কোনও মানুষই ভাল থাকেননি। তথ্য বলছে, গত সাড়ে ৯ বছরে ভারতের বুকে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। প্রতিদিন ২০ জন করে আত্মহত্যা করেছে।” দীপ্সিতা যখন এ কথা বলছেন তখনই আচমকা দেখা গেল মঞ্চের পিছনে হালকা একটা উত্তেজনা। কিছু বোঝার আগেই দেখা গেল এক যুবক তারস্বরে চেঁচাচ্ছেন। প্রতিবাদী যুবকের স্পষ্ট আপত্তি দীপ্সিতার ‘হিন্দুত্ববাদী’ রাজনীতি নিয়ে কথা বলায়।
এদিকে চেঁচামেচি শুনে ততক্ষণে স্টেজের কাছে এগিয়ে এসেছেন একদল এসএফআই কর্মী সমর্থক। তাঁদের সঙ্গেও ওই যুবকের একপ্রস্থ বচসা হয়ে যায় বলে খবর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশও। শেষে পুলিশি হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যুবককে। যুবক বলছেন, আমার স্কুটিটা ওখানে রাখা ছিল। ওরা সব ওটায় বসে খারাপ করে দেওয়ার উপক্রম করেছিল। ওটা দেখে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। তারপর দেখি একই কথা বলে যাচ্ছেন। তখনই প্রতিবাদ করি।
যদিও এ ঘটনাকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ দীপ্সিতা। ঘটনায় তিনি বলেন, আমি অনেক কথা বলেছি। কৃষকের কথা বলেছি, শ্রমিকের কথা বলেছি, কুস্তিগিরদের কথা বলেছি। কিন্তু উনি শুধু রামমন্দিরটাই শুনতে পেয়েছেন। আসলে যাঁরা সমস্যা তৈরি করতে চান। তাঁরা অনেক কিছুই খুঁজে বের করবেন। কিন্তু, আমরা জানি আমরা কোনও অযৌক্তিক কথা বলিনি।
প্রসঙ্গত, হাতে আর মাত্র ক’টা দিন। উদ্বোধন হবে অযোধ্যার বহু প্রতীক্ষিত রামমন্দির। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে। যা নিয়ে দেশজুড়ে চলছে চর্চা। তারমধ্যে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে তরজা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতির আঙিনায়। এদিকে রাম মন্দিরকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে বামেরা। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য জেলায় জেলায় সার্কুলার দেওয়া হয়েছে রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে।