বীরভূম: পরিবারের চারজনের পেট চালাতে হয় প্রত্যেকদিন। মায়েরই পেট ভরে না, তার ওপর আবার তিন সন্তান। স্বামী রোজগারের জন্য বাইরে গেলেও টাকা আসে না সময় মতো। এ ভাবে আর কতদিন চলবে! হয়ত এ কথা ভেবেই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন মা। নিজের সন্তানের মৃত্যু হবে জেনেও এমন কাজ করতে দ্বিধা বোধ করলেন না তিনি! তিন সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ খেলেন তিনি। বীরভূমের ঘটনা। কীর্ণাহার থানার কালীনগর গ্রামে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করলেন একই পরিবারের চারজন। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই মেয়ের। আর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মা ও আট বছরের ছেলে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, স্বামী অনেক দিন ধরে বাইরে থাকলেও ঠিক মতো টাকা পাঠান না। ফলে তিন সন্তানকে খাওয়া-পরার দায়িত্ব কী ভাবে সামলাবেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না সেরিনা বিবি। বছর তিরিশের ওই মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে আরবে থাকেন।
গত সাত মাস ধরে নাকি টাকা পাঠাননি তিনি। টাকার অভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা। পুরো পরিবারই বিষ খায়, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। জানা গিয়েছে ওই পরিবারের দুই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম হাসি খাতুন (বয়স ১৩) ও খুশি খাতুন (বয়স ১০)। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাদের। এক আত্মীয় জানিয়েছেন, কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই মৃত্যু হয়েছে হাসি ও খুশির। মা সেরিনা বিবি ও ছোটো ছেলে ইরফান শেখ আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
জানা গিয়েছে, সেরিনা বিবির স্বামী হোসেন শেখ মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুরের বাসিন্দা। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে আরবে আছেন তিনি। আরব থেকে গত সাত মাস ধরে কোনও টাকা পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে ঝগড়া চলত বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্য়াতেও একই ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন। আর তারপরই সম্ভবত এই সিদ্ধান্ত নেন সেরিনা বিবি। সন্তানদের বিষ খাইয়ে নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরে আত্মীয়রা দেখতে পেয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।