Deocha Pachami Scheme: ‘পুঁজিপতিদের আরও পুঁজিপতি করার উন্নয়ন চাই না’, দেউচা পাচামি ঘুরে মন্তব্য নওশাদের
ISF MLA Naushad Siddiqui: 'পুঁজিপতিদের আরও পুঁজিপতি করার উন্নয়ন চাই না'। তাঁর এও অভিযোগ, শাসক দল এখানে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। যদি উন্নয়নই তাদের লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে কেন এই পরিস্থিতি, প্রশ্ন নওশাদের।
বীরভূম: দেউচা পাচামি প্রকল্প (Deocha Pachami Scheme) নিয়ে আদিবাসীদের একাংশের বিক্ষোভের মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত। এর মধ্যে মঙ্গলবার আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী (Naushad Siddiqui) ঘুরে দেখলেন বীরভূমের মহম্মদবাজার এলাকা। এলাকা পরিদর্শন করে তাঁর মন্তব্য, ‘পুঁজিপতিদের আরও পুঁজিপতি করার উন্নয়ন চাই না’। তাঁর এও অভিযোগ, শাসক দল এখানে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। যদি উন্নয়নই তাদের লক্ষ্য হয়ে থাকে তাহলে কেন এই পরিস্থিতি, প্রশ্ন নওশাদের।
মাসখানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন করে দেউচা পাচামি কোল ব্লক নিয়ে প্যাকেজ ঘোষণার পর থেকে স্থানীয়দের একাংশের বিরোধিতা দেখা গিয়েছে। আবার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশ এবং বিরোধী দলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে কোনওভাবেই এখানে শিল্প হতে দেওয়া যাবে না। এই সকল বিরোধীদের তালিকায় এবার নাম লেখালেন আব্বাস সিদ্দিকীর দল আইএসএফ।
মঙ্গলবার মহম্মদবাজার এলাকা ঘুরে দেখে সিদ্দিকীর মন্তব্য, “দ্বিতীয় বৃহত্তম কোল ব্লকে বিশাল একটা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার পরেও সবাই সন্তুষ্ট নয়। নিশ্চয়ই এর কারণ আছে। কেন দশ হাজার কোটি টাকাক প্যাকেজ ঘোষণার পরও এলাকাবাসী সন্তুষ্ট নয়? কেন বিদ্রোহ হচ্ছে, সত্যিই কী চাইছে এলাকার মানুষ, একজন বিধায়ক হিসাবে, বিধানসভার সদস্য হিসাবে তা দেখতে এসেছি”।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজ করি। এলাকায় এসে যেটা বুঝলাম মানুষকে ভয় দেখিয়ে রেখেছে। যেন পুরুষশূন্য গ্রাম করে রেখে দিয়েছে”! নওশাদের দাবি, “শাসক দলের শাসানি ও ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতেও চাইছেন না। প্রশ্ন এখানেই, যদি রাজ্যের এত ভাল কাজ করছেন, এভাবে এদের রেখে দেওয়া হচ্ছে কেন”?
আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে আইএসএফের বিধায়ক বলেন, “আমরাও উন্নয়ন চাই। কিন্তু আমরা সেই উন্নয়ন চাই না যেখানে প্রান্তিক মানুষকে সর্বহারা করে দিয়ে পুঁজিপতিদের আরও পুঁজিপতি করে দেওয়া হয়”। সিদ্দিকীকে এলাকা পরিদর্শন এবং সাধারন মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানেই অভিযোগ জানান, শাসক দল এবং প্রশাসন স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ভীতির বাতাবরণ তৈরি করে রেখেছে। কেউ সেই ভাবে মুখ খুলতে চাইছেন না। আর যদি বা কেউ মুখ খুলতে চাইছেন, ক্যামেরা দেখলেই তাঁরা দূরে সরে সরে যাচ্ছেন! তিনি জানান শিল্প হোক তবে আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষা করে যেন তা হয়।
প্রসঙ্গত, বারবার আদিবাসীদের একাংশ আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি, কোনও শিল্প চাননা। পূর্বপুরুষের ভিটেজমি বেচে দিয়ে কোথাও যাবেন না। এ নিয়ে একাধিক বার উত্তেজনা ছড়িয়েছে দেউচা পাচামিতে। যদিও অনুব্রত মণ্ডলদের দাবি, বিরোধীদের একাংশ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে আদিবাসীদের খেপিয়ে তুলতে চাইছেন। এর মধ্যে সম্প্রতি প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক করে ফেলেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। যদিও আন্দোলনও চলছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, বীরভূমের দেউচা পাচামিতে সিঙ্গুরের ছায়া দেখা যাচ্ছে। তফাৎ শুধু তখনকার বিরোধী রাজনৈতিক দল এখন শাসকের আসনে আর শাসকরা বিরোধীর ভূমিকায়।
আরও পড়ুন: TMC Clash: ভর দুপুরে চলল বোমা-গুলি, তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩