বীরভূম : জমি কী ভাবে অন্যের নামে চলে গেল, তা জানেনই না জমিক মালিক। অনুব্রত-গড়ে সামনে এল এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ। তবে এবার অভিযোগের কেন্দ্রে বীরভূমের তৃণমূল অনুব্রত মণ্ডল নন, তাঁর দাদা সুব্রত মণ্ডল। গুরুপল্লির বাসিন্দা শুক্লা মণ্ডলের তেমনই বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনেছেন। জাল নথি তৈরি করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
অনন্তময়ী মজুমদার নামে এক মহিলার নামে ছিল সেই তিন বিঘা জমি, যাঁর দাম বর্তমানে প্রায় কয়েক কোটি টাকা। তাঁর মেয়ে শুক্লা জানান, কষ্ট করে গয়না বিক্রি করে ওই জমি কিনেছিলেন তাঁর মা। কিন্তু বছর কয়েক আগে আচমকাই তাঁরা জানতে পারেন জমির মালিকানা বদল হয়ে গিয়েছে। ইলমবাজারের বাসিন্দা বামাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, বলরাম ভট্টাচার্য, কৃষ্ণরায় ভট্টাচার্য, ভৃগুরাম ভট্টাচার্যের নাম ওঠে জমির দলিলে। অনন্তময়ী জমি দান না করা সত্ত্বেও কী ভাবে এমনটা হল, তা ভেবে পান না তাঁরা। পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেই দাবি অনন্তময়ীর পরিবারের। পরে মামলা হয় ওই জমি নিয়ে। এরই মধ্যে দেখা যায়, মালিকানা বদলে গিয়েছে আবারও। সুব্রত মণ্ডল ও উত্তম রায় নামে দুজনের নাম ওঠে ওই দলিলে। TV9 বাংলার হাতে এসেছে সেই জমি সংক্রান্ত তথ্য। ভৃগুরাম ভট্টাচার্যকে TV9 বাংলার তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কী ভাবে তাঁরা ওই জমি বিক্রি করলেন? ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি কিছুই জানেন না, তাঁর অন্য ভাইয়েরা এই কাজ করেছেন।
জমি রাতারাতি কী ভাবে বেহাত হয়ে গেল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না শুক্লা। এ ভাবে জমি হারানোর পর তাঁর মা ক্রমে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। মৃত্যুও হয় অনন্তময়ীর।
জমি দখলের কথা জানতে পেরে, বোলপুর থানায় ৬ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু, অভিযোগ তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। শেষে আদালতে মামলা করেছিলেন ভুক্তভোগীরা। শুধু তাই নয়, জমির কাগজ পত্র নিয়ে অনুব্রত মণ্ডলের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তাঁরা। অনেকেই তাঁদের পরামর্শ দিয়েছিলেন, অনুব্রত চাইলে সমস্যা সমাধান করতে পারেন। সেই মতো তাঁরা যখন অনুব্রতর কাছে যান, তাঁদের সাহায্য তো দূরের কথা কার্যত বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।