বোলপুর: জমি বিতর্কের আবহে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীতে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। জমি সংক্রান্ত সব কাগজপত্র নিয়েই অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করতে আসলেন মমতা। সেই সব ইস্যু নিয়ে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বসেই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘আমি ল্যান্ডের রেকর্ড নিয়ে এসেছে। আমি কয়েকদিন ধরে সরকারকে দিয়ে সার্ভে করিয়েছি।’ হাতে থাকা নথি দেখিয়ে বললেন, ‘এটাই হল আসল ডকুমেন্ট।’ সঙ্গে বেশ হুঁশিয়ারির সুরও শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। বললেন, ‘অনেকদিন ধরে সহ্য করছি। একজন মানুষকে অসম্মান করা হচ্ছে। আমরা আইনত কী করতে পারি, সেটা আমি ফিরে যাওয়ার পর জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়ে দেব।’
জমির ‘আসল’ নথি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের হাতে তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি অমর্ত্য সেনের নিরাপত্তাব্যবস্থাও আরও জোরদার করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি। উপস্থিত পুলিশ আধিকারিকদের বললেন, ‘স্যর যখন বেরোবেন এখান থেকে, যখন কোথাও যাবেন, স্যরকে জেড প্লাস নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।’ প্রতীচীতে বসেই ফোন করেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্যকে। ফোনেই নির্দেশ দেন, ‘ওনাকে জেড প্লাস করে দাও।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জমির রেকর্ড মেনন্টেন করে রাজ্য সরকার। বিশ্বভারতীর জমিও তো আমরাই দিয়েছি।’ পুরনো সরকারি নথি ঘেঁটে দেখে বললেন, রাজ্য সরকারই অতীতে বিশ্বভারতীকে জমি দিয়েছে। সেই জমি লিজ়ে দেওয়া হয়েছে নাকি পুরোপুরি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই বিষয়টিও খোঁজখবর নিয়ে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি সংক্রান্ত বিতর্ক ঘিরে যে চর্চা চলছে, সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং প্রতীচীতে এসে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়ানো স্বাভাবিকভাবেই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও জানান, তিনি বিএলআরও বা জেলাশাসকের হাত দিয়েও এই নথি অমর্ত্য সেনকে পাঠাতে পারতেন। কিন্তু তা না করে নিজে এসে এই নথি অমর্ত্য সেনের হাতে তুলে দেন তিনি। নোবেলজয়ীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবরও নেন তিনি।