রামপুরহাট: যত কাণ্ড যেন বীরভূমেই। এবার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের চালান জাল করার অভিযোগ। বালিঘাট থেকে বালি তোলার জন্য সরকারি চালান জাল করার অভিযোগে এক ছাপাখানার মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম আলতামাস কবির মল্লিক। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানা এলাকার কলেশ্বরে ওই ব্যক্তির একটি ছাপাখানা রয়েছে। গোপন সূত্র মারফত সরকারি চালান জাল করার অভিযোগ আগে থেকেই পেয়েছিল পুলিশ। সেই মতো মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ছাপাখানায় হানা দেয় ময়ূরেশ্বর থানার পুলিশ। অভিযানে ছিলেন বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক অসীম পাল ও রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্রও। গতরাতের ওই যৌথ অভিযানেই পাকড়াও করা হয় চাল চালানের অন্যতম চক্রী আলতামাসকে। বুধবার অভিযুক্তকে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক আলতামাসকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ময়ূরেশ্বরের ওই ছাপাখানা বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনও উপায়ই নেই যে ভিতরে এই বেআইনি কারবার চলে। আর পাঁচটা সাধারণ ছাপাখানার মতোই। বাইরে একটি সাইনবোর্ডও রয়েছে। সেখানে লেখা, বই বাঁধানো হয়। কিন্তু এর আড়ালেই চলত জাল সরকারি চালানের কারবার। দিন-রাত লাখ লাখ টাকার লেনদেন চলত বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, এদিকে এই নকল চালানের কারবারের ফলে, সরকারের ঘরে রাজস্ব ঢোকা কমে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠে আসছে।
উল্লেখ্য, বীরভূম জেলায় একাধিক বৈধ বালিঘাট রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সেখান থেকে বালি তোলার জন্য অনলাইনে সরকারি চালান কাটতে হয় এবং সেই চালান ছাপিয়ে রাখতে হয়। এরপর বিক্রির সময় সেই চালান দেখালে, তবেই ছাড়পত্র মেলে। কিন্তু সেই সরকারি চালান ব্যবহার না করে, কোনও কোনও ট্রাক চালক জাল চালান ব্যবহার করছিল বলে সূত্রের খবর। সেই নিয়ে অভিযোগ আসতেই এবার তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করল পুলিশ। ওই ছাপাখানার মালিককে গ্রেফতার করা গেলেও, রাতের অন্ধকারের সুযোগে ছাপাখানার সঙ্গে যুক্ত আরও বেশ কয়েকজন গা ঢাকা দিয়ে দিয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। তবে আলতামাসের থেকে একটি দামি মোবাইল, ল্যাপটপ ও ছাপাখানার যন্ত্রপাতি-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।