শান্তিনিকেতন: বহিষ্কৃত ছাত্রদের ক্লাসে ফেরানোর পরও শান্ত হয়নি বিশ্বভারতী। ফের বিশ্বভারতীতে আন্দোলনের হুমকি। উপাচার্যকে সরানোর দাবিতে এখনও অনড় বিক্ষোভকারীরা। বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন বাঁচাও যৌথ মঞ্চের তরফে একাধিক অভিযোগ তুলে চিঠি দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অপসারণের দাবিতে আরও তীব্রতর আন্দোলন হতে চলেছে বিশ্বভারতীর বুকে, এমনটাই দাবি যৌথ মঞ্চের।
বৃহস্পতিবার যৌথ মঞ্চের তরফে একটি বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী দিনে কোম পথে এগোবে আন্দোলন। তবে তাদের স্পষ্ট বার্তা, উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলবে।
আজ বৈঠকের পর বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে তারা, উপাচার্যের নানান দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাদের দাবি, উপাচার্য একের পর এক অনৈতিক কাজ করে চলেছেন। তাই তারা অপসারণের দাবি তুলছেন। অন্যদিকে, তাদের আরও অভিযোগ, বিশ্বভারতীকে আদালতের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও বহিস্কৃত ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত মাসের ২৭ তারিখ থেকে বিশ্বভারতীর তিন ছাত্রকে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে আচার্যের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। সেই সময়ই তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করে শান্তিনিকেতন প্রিয় বহু মানুষ। সেই সময় গড়ে ওঠে বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন বাঁচাও যৌথ মঞ্চ। এবার তারাই, বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিলেন।
বিশ্বভারতী শান্তিনিকেতন বাঁচাও যৌথ মঞ্চের তরফে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিশ্বভারতীর মেলা মাঠ বাঁচাও কমিটি সহ, আশ্রমিক অধ্যাপক সকলের বিরুদ্ধে উপাচার্য যে একের পর এক অনৈতিক কাজ করে চলেছেন তার প্রতিবাদে আমরা তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। আমরা ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে এই বিষয় নিয়ে চিঠি দিচ্ছি। এরপরেও কোনও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, আমরা আবারও আন্দোলনে নামবো।
অন্যদিকে বিশ্বভারতীর পড়ুয়া রুপা চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা পূর্বতন যে আন্দোলন করেছিলাম তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা আলোচনায় বসে ছিলাম। সেখানে আমরা আগামিদিনে কী ভাবে আন্দোলন করব সেই নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মূলত আমরা এই স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগ দাবি করছি।’ এদিন শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতী বাঁচাও যৌথ মঞ্চের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক, ছাত্র, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, আলাপিনী মহিলা সমিতি সহ নানান মঞ্চের মানুষেরা।
ইতিমধ্যেই পাঁচ দিনের ছুটি নিয়েছেন উপাচার্য বিদ্যৎ চক্রবর্তী। এই আন্দোলনের আবহে উপাচার্যের ছুটি ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা। ২২ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে থাকছেন উপাচার্য। এই পাঁচ দিন উপাচার্য পদ সামলাবেন বিশ্বভারতীর শিক্ষাভবনের অধ্যক্ষ তারাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এই ছুটি নিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন উপাচার্য।
আরও পড়ুন: Bishnupur Tender Case: প্রাক্তন মন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে মিলল আরও ৪ কোটি