কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার নয়া নাম বিভাস অধিকারী। তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, গোপাল দলপতি, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের পর এই তালিকায় নয়া সংযোজন বিভাসের নাম। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে তিনিও তাপসেরই মতোই টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলির সংগঠনের মাথা। অথচ এই বিভাসই আবার দাবি করেছেন, তিনি কুন্তল কিংবা তাপস কাউকেই চেনন না। জানা যাচ্ছে, নলহাটিতে বিভাসের বাড়ি। সেখানে আশ্রম রয়েছে তাঁর, রয়েছে বিএড কলেজও। এছাড়াও রয়েছে ওষুধ ফ্যাক্টরি। স্থানীয় এলাকায় ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিভাস। বীরভূমের নলহাটিতে তাঁর আশ্রমে পৌঁছে যান TV9 বাংলার প্রতিনিধি। এটাই বিভাস অধিকারী চালান বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
নলহাটিতে একটি ওষুধ কারখানা রয়েছে বিভাসের। তাঁর কারখানায় তৈরি হজমের ওষুধ এলাকার বিভিন্ন দোকানে পাওয়াও যেত বলে খবর। নিয়োগ দুর্নীতির টাকাই এই কারখানা কিংবা আশ্রমে বিনিয়োগ হত কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এলাকায় কান পাতলে শোনা যায়, বিভাসের বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখলেরও অভিযোগ। এলাকায় তাঁর ভাল দাপট রয়েছে। যেহেতু তিনি শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত, তাই ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এই বেনিয়মে তিনিই নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘গুরু ভাই’। সূত্র বলছে, দুর্নীতির একাধিক চোরাপথ নাকি নির্ধারিত করে দিতেন তিনিই। উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে তিনি নলহাটি ২ নম্বর ব্লক সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আবেদন গৃহীত হয়নি। তাঁর জায়গায় অন্য কাউকে বসানোও হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারাই জানাচ্ছেন, তিনি এলাকায় ধর্মীয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। ২০১২-২০১৮ সাল পর্যন্ত অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনে সক্রিয় ছিলেন বিভাস। যখন নিয়োগ কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে, তার আগে অর্থাৎ তাপস মণ্ডল এর সংস্থার দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকে ৬ বছর দায়িত্ব সামলেছেন বিভাস অধিকারী। অভিযোগ উঠছে, কলেজগুলিতে অফলাইনে ছাত্র ভর্তি করে দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা সরাসরি পৌঁছে যেত মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।
শিয়ালদার কাছেই রয়েছে বিভাসের ফ্ল্যাট। আর সেই ফ্ল্যাটেই একসময়ে ছিল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিংয় কলেজ সংগঠনের সিটি অফিস। সেই ফ্ল্যাট অবশ্য ইতিমধ্যেই সিল করে দিয়েছে ইডি।