বীরভূম: জেলায় রবিবার পা রাখছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার আগেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠল বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে রবিবার জেলায় আসছেন অভিষেক। তবে তার আগেই তৃণমূলের চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখা গেল সাঁইথিয়ায়। শনিবার সাঁইথিয়ার একটি হোটেলে বৈঠক করে সাঁইথিয়া তৃণমূলের কয়েকজন নেতা। অভিষেকের কর্মসূচির জন্য একটি আলোচনা সভায় এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি বিরুদ্ধে ক্ষোভ উপড়ে দিলেন বনগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তুষার কান্তি মণ্ডল। আর তাতেই বাড়ল রাজনৈতিক শোরগোল। ব্লক সভাপতি সাবের আলির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পাশাপাশি তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ওঁর জন্যই এলাকায় অন্যান্য দলের রমরমা বলে অভিযোগও করেছেন। নিজের বাড়িতে পার্টি অফিস করা থেকে শুরু করে আরও নানন অভিযোগ এনেছেন। তাঁর আরও দাবি, ওঁকে ব্লক সভাপতি রাখা হলে দলের চরম ক্ষতি হয়ে যাবে।
ঠিক কী বলেছেন তুষারকান্তি? পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “ব্লক সভাপতি তো জেলা নেতৃত্বের নির্দেশই মানেন না। তার বাইরে গিয়ে কাজ করেন। জেলা নেতৃত্ব সবসময় বলেছে, এক সঙ্গে বসে ব্লকের উন্নয়নের জন্য আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু ওঁ তো কোনও আলোচনায় কখনই বসেন না।” তিনি আরও বলেন, “ওঁকে এই দিনের কর্মসূচি নিয়েও বলা হয়। কিন্তু এলেন না। আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাব, সাঁইথিয়া অঞ্চলে না তো ব্লক কমিটি হয়েছে, না অঞ্চল কমিটি। বিগত পাঁচ বছর ধরে সাঁইথিয়া ব্লকের কোনও ব্লক কমিটি নেই। আমরা যাব অভিষেকের সভায়। পঞ্চায়েতে যাতে প্রত্যেকটা ব্লকেই জোড়া ফুল জেতে, তার জন্য আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
ব্লকের সংখ্যালঘু সভাপতি ইউনুস খানের বক্তব্য, “ব্লকের কয়েকজন নেতৃত্ব রয়েছেন, যাঁরা অসৎ কাজের সঙ্গে যুক্ত। কিছুদিন আগেই একটা খবর হয়েছিল, ব্লক সভাপতি নিজের মেয়ের নামেই পাট্টা নিয়েছিলেন।পরিহারপুর মৌজায় নিজের তিন মেয়ের নামে বেশ কিছু জমি নিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ তা জানে, তার প্রভাব পড়বে ভোটে।”
ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল ব্লক সভাপতি সাবের আলির সঙ্গে। তিনি বলেন, “সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা, কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক। দলের হয়ে কাজ করি এবং করব।”
সাঁইথিয়ার রাজনৈতিক মহল বলছে, সাবের গোষ্ঠী ও তুষার গোষ্ঠীর এই লড়াই দীর্ঘদিনের। কিন্তু অভিষেকের সভার ঠিক আগেই যেভাবে প্রকাশ্যে এল বিবাদ, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অভিষেক এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেন কিনা, তার দিকে তাকিয়ে জেলা নেতৃত্ব।