বীরভূম: কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নয়, শান্তিনিকেতনের মাটিতে রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্পর্শ। কিন্তু সেই শান্তিনিকেতন রাজনীতির তরজা থেকে মুক্ত থাকতে পারেনি। প্রায় শতবর্ষ পেরনো প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। কখনও বিক্ষোভ, কখনও উপাচার্য ঘেরাও, কখনও রাজনৈতিক নেতাদের আলটপকা মন্তব্য সামনে এসেছে। এবার ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর মর্যাদা রক্ষার দায় কি বেড়ে গেল না সেই রাজনৈতিক নেতাদের?
প্রবীণ আশ্রমিক স্বপন কুমার ঘোষের মতে, রাজনীতি ভুলে গিয়ে সবাইকে একত্রিত করে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আগে কী হয়েছে, সেগুলো আর মনে রাখলে চলবে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাপ্তির মতো হেরিটেজ তকমা পাওয়াটাও গর্বের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন পড়ুয়া নুরুল হকও জানিয়েছেন, বিশ্বভারতীর নাম কোনও বিতর্কে জড়াক, তা তিনি চান না। তিনি বলেন, যিনি উপাচার্য তিনিই যদি নানা ভাবে বিতর্কিত কথাবার্তা বলেন তাহলে কীভাবে এ সব বন্ধ হওয়া সম্ভব। রাজনৈতিক দলগুলির আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে সিপিএম-এর বীরভূম জেলার সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর রাজনৈতিক তরজা বা এই ধরনের কূটকচালি বন্ধ হওয়া দরকার। কারণ বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে তৈরি। তাঁর নিজস্ব একটা গরিমা রয়েছে। শান্তিনিকেতনের নিজস্ব একটা ঐতিহ্য রয়েছে। তাঁর মতে, যাঁরা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়ার কৃতিত্ব নিয়ে টানাটানি করছেন, তাঁরা শান্তিনিকেতন বা বিশ্বভারতীকে ভালবাসেন না। সকলের দায়িত্ব যে বেড়ে গেল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তিনি বলেন, “রাষ্ট্র, কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার থেকে সাধারণ মানুষ, সকলের দায়িত্ব বাড়ল।”
অন্যদিকে, নোংরা রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলার সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীকে হেরিটেজ তকমা দেওয়া হয়েছে। এটা শুধুমাত্র বীরভূম বা পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা ভারতের মানুষের গর্বের কারণ। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার। সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করা দরকার এবং বিশ্বভারতীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও এই ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন।