দেউচা পাঁচামি: দেউচা পাঁচামিকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়াচ্ছে বিজেপি। একদিকে যখন কলকাতায় বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন চলছে, দেশ-বিদেশ থেকে তাবড় উদ্যোগপতিরা এসেছেন, ঠিক তখনই সিঙ্গুর ও দেউচা পাঁচামিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরও সংঘবদ্ধ করছে বিজেপি। বুধবার বিজেপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে দেউচা পাঁচামিতে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর একই সঙ্গে সিঙ্গুরেও আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছে বিজেপি। সেখানে গিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির এই জোড়া ফলায় বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের একটু হলেও অস্বস্তি রাজ্যের শাসক শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা।
বুধবার দশ জন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে দেউচায় পৌঁছে যান শুভেন্দু অধিকারী। উল্লেখ্য, বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের সামনে দেউচা পাঁচামির খোলা মুখ কয়লা খনিকেই প্রজেক্ট করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। আর সেই সময়ই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করলেন, দেউচা ক্লোজ়ড চ্যাপ্টার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেন্দুর পরামর্শ, তিনি যেন নিজের মাথা থেকে দেউচাকে ঝেড়ে ফেলেন। দেউচার প্রকল্প যে কোনওভাবেই হবে না, সেই কথাও বুঝিয়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, “বেআইনিভাবে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে। একদিকে বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন হচ্ছে। অন্যদিকে আদিবাসীদের উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হচ্ছে। দেউচা পাঁচামি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লোজ়ড চ্যাপ্টার। মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। নাহলে নন্দীগ্রামের থেকেও বড় আন্দোলন হবে। প্রতি মাসে দুইবার করে আমি আসব। ৮ মে-র পরে উচ্ছেদ বিরোধী পদযাত্রা করবে বিজেপি।” সেই সঙ্গে শুভেন্দু আরও জানান, দেউচার আন্দোলনকারীদের মঞ্চের প্রতিও তাঁদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তাঁরা অরাজনৈতিক মঞ্চে প্রতিবাদ করছেন, তাই শুভেন্দু অধিকারীরা সেখানে যাননি।
অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার গিয়েছিলেন সিঙ্গুরে। সেখানেও বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে মমতাকে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না তিনি। বললেন, “শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। তাই সিঙ্গুরে দেখতে এসেছি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তার আগে সিঙ্গুরকে শিল্পের বদ্ধভূমিতে পরিনত করেছেন। সেই এলাকাই দেখতে এসেছি। তারপর উনি বলেছিলেন, এখানে প্রচুর কাশফুল হয়। বালিশ লেপ তৈরির শিল্প হবে। এসে দেখলাম সেই মেশিনগুলিও লাগেনি। কতগুলি ভেড়ি হয়েছে দেখলাম। এখানকার বিধায়ক বেচারাম মান্নার ও মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায়।”
সুকান্ত বাবু আরও বলেন, “রাজ্য সরকারকে ভাবতে হবে জমি নীতি কী হওয়া উচিত। রাজ্য তো বলেছিল ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে, কোথায় কেউ দেখেনি। দেউচা পাঁচামিতে পাথর কয়লা লুটের কারবার হবে। কয়লার অনেকগুলি স্তরে পাথর আছে। তৃণমূল নেতাদের টার্গেট হল সেই পাথর। আদিবাসীদের উৎখাত করে এই পাথর ব্যবসা করতে সেই সব পান্ডাদের হাতে জমিগুলিকে তুলে দিতে চায় শাসক দল।”
আরও পড়ুন : Suvendu vs Mamata: ‘শিল্পপতি কি ওনার ভাইপো? আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়’, এজেন্সি ইস্যুতে মমতাকে পাল্টা শুভেন্দুর