বীরভূম: ভোট আসলে ‘কেষ্টদা’র ‘সাজেশন’-এ ভরসা রাখতেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। দলের কর্মীরাই বলতেন, কেষ্টদার কৌশলেই অনায়াসে ভোট বৈতরণী পার করেন তাঁরা। তবে এবার তো আর সেই ‘দাদা’ নেই, নেই দাদার ‘দাওয়াই’ও। বদলে এবার শতাব্দী রায়, কাজল শেখরাই ‘নেতা’। কোন পথে লোকসভার লড়াই হবে, তা ঠিক করতে শনিবার বৈঠকে বসেছিলেন তাঁরা। সিউড়ির স্টেডিয়ামে এই বৈঠক হয়। অভিযোগ, কেষ্টহীন বীরভূমে গোষ্ঠীকোন্দলের কাঁটায় বিদ্ধ তৃণমূল। দলও যে তা মানছে, এদিন কাজল শেখের বার্তায় তেমন ইঙ্গিতই মিলল।
জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, পরিযায়ী পাখির মতো এখানে এসে লাভ নেই। বীরভূমের দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবে তৃণমূলই। তবে আত্মবিশ্বাসের কথা শোনালেও কাজল জুড়ে দিলেন, “কোনও জায়গায় যদি আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে তাহলে সেটাকে বসে মিটিয়ে দিতে হবে।” একই বার্তা চন্দ্রনাথ সিনহারও। বৈঠক থেকে নেতৃত্বের নির্দেশ, প্রয়োজনে বুথ সভাপতিকে সরিয়ে পাঁচ সদস্যর কমিটি গড়তে হবে।
এদিন চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, “আপনারা বুথে বুথে ঘুরছেন না, মানুষকে বোঝাচ্ছেন না। সাংসদরা কী কাজ করেছেন আপনারা বলতে পারছেন না। আমাদের এখানে কিন্তু কোনও গ্রুপ নেই। যাঁরা এই সমস্ত গ্রুপ করছেন তাঁদের সাবধান করছি। এবার বোঝাতে হবে এবং বোঝা যাবে যে পঞ্চায়েত ভোট সঠিক হয়েছে না বেঠিক। মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের জিতিয়েছে নাকি আমরা এমনি জিতেছি এবার বোঝা যাবে।” জেলার দীর্ঘদিনের নেতা চন্দ্রনাথের বার্তা, বিরোধীদের সাঁড়াশি আক্রমণ করে জেলার ২টি আসন জিতিয়ে আনতে হবে।
বৈঠক থেকে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়ের বার্তা, বুথের দিকে বেশি করে নজর দিতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটের মতো করেই কর্মীদের লোকসভা ভোটে ঝাঁপানোর বার্তা দেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বুথস্তরকে আরও শক্তিশালী করতে প্রয়োজনে বুথ সভাপতিকে সরিয়ে কমিটি গড়ারও কথা বলে নেতৃত্ব।