বীরভূম: তিনি যখন যা ভবিষদ্বাণী করেন তাই মিলে যায়। যখন যা চান, তাই পান। তাঁর সকল প্রাপ্তির নেপথ্যে রয়েছেন ‘কল্পতরু দেবী কালী’। তাই কঙ্কালীতলায় ‘মায়ের নামে’ মহাযজ্ঞের আয়োজন করলেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি চেয়েছিলেন বঙ্গে যেন জয়ী হয় তৃণমূল। বরাবরের মতো আত্মবিশ্বাসী ঢঙে বলেছিলেন, “আমরা ২২০-২৩০ টা আসনে জিতব”। হয়েছেও তাই। সেই কথা স্মরণ করেই কঙ্কালীতলায় সতীপীঠে বৃহস্পতিবার মহাযজ্ঞের আয়োজন করলেন তৃণমূল নেতা। সঙ্গে দলের মঙ্গলকামনাও করলেন অনুব্রত।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কঙ্কালীতলায় সাজো সাজো রব। গোটা মন্দির চত্বর সাজানো হয়েছে আলো দিয়ে। জনসমাগমও চোখে পড়ার মতো। মহাযজ্ঞের প্রস্তুতির পর শুরু হয়েছে পুজোপাঠও। জানা গিয়েছে, যজ্ঞে পোড়ানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে প্রায় ১ কুইন্টাল ৬৮ কেজি বেল কাঠ। তার সঙ্গে উত্সর্গ করা হচ্ছে পাঁচ টিন ঘি ও এক হাজার একটি বেল পাতা। যজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছেন ১১ জন পুরোহিত। তাঁদের মধ্যে ৮ জনই আদ্যাপীঠের পুরোহিত। এছাড়া রয়েছেন তিন জন স্থানীয় পুরোহিত। জানা গিয়েছে যজ্ঞের সংকল্প করবেন অনুব্রতই।
যজ্ঞ উপলক্ষে প্রায় হাজার দশেক মানুষের অন্নভোগেরও আয়োজনও করা হয়েছে। সকাল থেকেই এই মহাযজ্ঞকে ঘিরে বহু মানুষ আসেন কঙ্কালীতলা মন্দিরে। নিজের অনুগামী ও দলের অন্যান্য বিধায়ক কর্মীদের নিয়ে মন্দিরে এসে পৌঁছন অনুব্রতও। তিনি বলেন, ‘‘আমি বিধানসভা নির্বাচনের আগেও মায়ের কাছে যজ্ঞ করেছিলাম। মা আমার কথা রাখে, সে কারণেই আবার এই যজ্ঞের আয়োজন করেছি। আবারও যজ্ঞ শেষে মায়ের কাছে আগামী উপনির্বাচন, গোয়া এবং ত্রিপুরার ভোট নিয়ে মায়ের কাছে আশীর্বাদ চাইব। আমার বিশ্বাস, মা আবার আমার কথা রাখবে।’’
উল্লেখ্য, বুধবারই বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে অনুব্রত বলেন, “ত্রিপুরা ও গোয়া, দুই জায়গায়তেই আমরা জিতব। আমার কথা মিলিয়ে নেবেন। আগেও বলেছিলাম এখানে ২২০ থেকে ২৩০ টা আসনে জিতব। তাই হয়েছে তো! এ বার বলছি, ত্রিপুরায় ৩০ থেকে ৪০ টা আসন আর গোয়ায় আমরা ৪৫ টা আসন পাবই। মিলিয়ে নেবেন সকলে।”
তৃণমূল নেতার আরও মন্তব্য, “ত্রিপুরায় বিজেপি ভয় পেয়েছে। তাই হামলা করছে। তাতে কী হয়েছে। করুক! কত হামলা করব। জিতব তো আমরাই।” এরপরেই দলের কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “তৃণমূল সর্বভারতীয় দল। শুধু বাংলার কথা এখন ভাবলে হবে না। কোনওরকম গুন্ডামি বদমায়েশি মারদাঙ্গা যেন না হয়। আমি কিন্তু এসব একদম অ্যালাও করব না। গুন্ডামি করতে দেখলেই ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বের করে দেব। দুষ্টচু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভাল।”
আজই গোয়া সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ থেকে রওনা হয়ে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অন্যদিকে, গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন না দলের নেতা বিজয় সারদেশাই। তবে, গোয়ায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বার্তা দেন সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: ‘দিদি ওখানে এত এত মাল নিয়ে যাচ্ছেন…তাতেও বিজেপিকে হঠানো যাবে না’ , বিস্ফোরক অধীর