বীরভূম: বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না রবিঠাকুরের ‘সাধের-ভারতীর’। ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর (NAAC) মূল্যায়নে ফের নেমে গেল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)। এ বার ন্যাকের মূল্যায়নে বিশ্বভারতীর মান বি প্লাস গ্রেড। গত বারের তুলনায় কমেছে পয়েন্টও। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠনের একাংশ।
প্রাণপণ চেষ্টা করেও অবনমন ঠেকাতে ব্যর্থ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এ বারের ন্যাকের মূল্যায়নে ফের বিশ্বভারতী পেল বি প্লাস গ্রেড। ২০১৫ সালে বিশ্বভারতী পেয়েছিল ২.৮২ পয়েন্ট। আর এবার গ্রেড অনুযায়ী বিশ্বভারতীর ঝুলিতে পয়েন্ট ২.৭৫ বা তারও কম লাভ হয়েছে। যা ন্যাকের নিরিখে অত্যন্ত কম বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
গতবার, বিশ্বভারতীর কর্তৃপক্ষের তরফে ‘সাফাই’ দেওয়া হয়েছিল, ন্যাকের মূল্যায়নের বিষয়টি সম্পর্কে সঠিক ধারণা ছিল না। তাই সেই অর্থে ‘লক্ষ্যভেদ’ করতে ব্যর্থ হন তাঁরা। তবে এ বার আঁটঘাঁট নেমে পথে নেমেও কার্যত কোনও লাভ হল না বলেই দাবি করেছে বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠন। পাশাপাশি, তাঁদের আরও অভিযোগ, বিশ্বভারতীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ হওয়া বাকি রয়েছে। সেই শূন্যপদগুলি এখনও পূরণ হয়নি। এমনকী, নিয়োগের জন্য কোনও বিশেষ পদক্ষেপও করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে, শিক্ষক ও কর্মীদের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে।
বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠনের আরও অভিযোগ, ন্যাকের মূল্যায়নের উপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের নানা মেধাবৃত্তি নির্ভর করে। পড়ুয়াদের পড়াশোনাতেও সুবিধা হয়। কিন্তু, ন্যাকে ক্রমশ মান কমতে থাকলে তা সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রভাব ফেলে। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এখানেই শেষ নয়, আরও অভিযোগ, বিশ্বভারতীর নিজস্ব মূল্যায়ন বৈঠকও দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ। যার জেরে ন্যাকের মূল্যায়নেও প্রভাব পড়ছে বলেই দাবি করেছে বিশ্বভারতীর ছাত্র-শিক্ষক সংগঠন। মান নির্ধারণে গত মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে পৌঁছন ন্যাক-এর সদস্যরা। বুধবার থেকে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন তাঁরা। কিন্তু, সবরকম চেষ্টা করেও আখেরে লাভ হল না বলেই দাবি করছেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর আমল থেকেই নানা সময়ে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছে বিশ্বভারতী। কিছুদিন আগেই উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলনে নামেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। সম্প্রতি, অফলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশিকা জারি করেছে বিশ্বভারতী (Viswa Bharati University) কর্তৃপক্ষ। সব পড়ুয়াদের জন্য নয়, শুধুমাত্র স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অন্তিম সিমেস্টার, এম ফিলের সমস্ত পড়ুয়া এবং পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যই প্রাথমিক ভাবে এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। ১ ডিসেম্বর, বুধবার থেকেই অফলাইনে ক্লাস হওয়ার কথা। অফলাইন ক্লাস শুরুর আগেই রবীন্দ্রস্মৃতি বিজড়িত এই বিশ্ববিদ্যালেয়ের এমন অবনমনে প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল।