বোলপুর: ঘুমের মধ্যেই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে তিনজনকে খুন। তার মধ্যে একজন শিশু। বোলপুরের ঘটনায় উস্কে উঠেছিল বীরভূম জেলারই বগটুইয়ের স্মৃতি। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে। পরকীয়া সম্পর্ক জেনে ফেলায় বাড়িরই এক বৌ পুড়িয়ে মেরেছে তিনজনকে। অভিযুক্ত স্মৃতি বিবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার তাঁকে বোলপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এদিন ওই বাড়িতে ফরেনসিক টিমের সদস্যরা পৌঁছে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বোলপুরের রজতপুর গ্রামে খাবার খেয়ে বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন শেখা তোতা(৩৮), তাঁর স্ত্রী রূপা বিবি (৩০) ও তাঁদের সন্তান আয়ান শেখ (৪)। রাতে জানালা দিয়ে কেউ কেরোসিন ঢেলে ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির অন্যরা ছুটে আসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিনজনকে। প্রথমে তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে প্রথমে ৪ বছরের আয়ান ও পরে রূপা বিবির মৃত্যু হয়। অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি তোতা শেখকে। শনিবার একটি বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
তিনজনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনার তদন্ত নেমে পরকীয়া তত্ত্ব উঠে আসে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, তোতা শেখের ভাইয়ের স্ত্রী স্মৃতি বিবি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত। প্রেমিকের সঙ্গে স্মৃতিকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন রূপা বিবি। অভিযোগ, তারপরই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে রূপা বিবিকে খুনের ছক কষেন স্মৃতি বিবি।
তদন্তে নেমে প্রথমে স্মৃতি বিবিকে আটক করে বোলপুর থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় খুনের কথা স্বীকার করেন স্মৃতি বিবি। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ব্যবসায়িক কোনও শত্রুতার জেরে এই ঘটনা কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সরকারি আইনজীবী উদয় কুমার গড়াই জানান, এই খুনের ঘটনায় শফিকুর ইসলাম ওরফে চন্দন এবং আরও কয়েকজন জড়িত। শফিকুরের সঙ্গেই স্মৃতি বিবির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সরকারি আইনজীবী উদয় কুমার গড়াই বলেন, গত ৫ জুলাই বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তদন্তে নেমে গ্রেফতার করা হয় স্মৃতি বিবিকে। বোলপুর আদালতে তোলা হলে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক আমিরুদ্দিন আলি।