Recruitment Scam: ‘অয়নকে টাকা না দেওয়ায় চাকরি হয়নি’, চুঁচুড়ার চয়নিকাকে আইনি সাহায্য দেবে বিজেপি

Ashique Insan | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Apr 02, 2023 | 12:07 AM

নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের বিরুদ্ধে আরও এক অভিযোগ প্রকাশ্যে এল।

Recruitment Scam: অয়নকে টাকা না দেওয়ায় চাকরি হয়নি, চুঁচুড়ার চয়নিকাকে আইনি সাহায্য দেবে বিজেপি
চয়নিকা আঢ্যর বাড়িতে বিজেপি আইনজীবীর প্রতিনিধি।

Follow Us

চুঁচুড়া: নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অয়ন শীলের (Ayan Sil) বিরুদ্ধে আরও এক অভিযোগ প্রকাশ্যে এল। এবার টিটাগড় পুরসভায় (Titagarh Municipality)চাকরি পেয়েও টাকা না দিতে পারায় সেই চাকরি আর করতে পারেননি বলে অভিযোগ চুঁচুড়ার চয়নিকা আঢ্যর। অয়ন শীল টিটাগড় পুরসভায় চাকরি করতে দেওয়ার জন্য চয়নিকার থেকে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। প্রাণভয়ে এতদিন এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন চয়নিকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনেন এবং তাঁকে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে শনিবার চয়নিকার বাড়িয়ে যায় বিজেপির আইনজীবীদের একটি দল। তাঁরা চয়নিকাকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আইনি সাহায্যের অঙ্গীকার দিয়েছেন।

ঘটনাটি কী ঘটেছিল?
২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় পুরসভায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করেন চুঁচুড়া ষন্ডেশ্বরতলার চয়নিকা আঢ্য। জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ান ভালো অ্যাথলিট চয়নিকা প্লেয়ার্স কোটায় সেই চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারভিউয়ে ডাক পান। ইন্টারভিউয়ের পর চাকরি হয়ে যায় তাঁর। ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জয়েনিং লেটারও দেওয়া হয় পুরসভার তরফে। কিন্তু, চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি তিনি।

চয়নিকা জানান, এক পুলিশকর্মী একদিন তাঁর বাড়িতে এসে বলেন, অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করতে হবে। চাকরির ব্যাপারে কথা আছে। চয়নিকা তাঁর বাবাকে নিয়ে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাঁদের কাছে চাকরির জন্য ৫ লাখ টাকা চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও অয়ন শীলের হাত ধরে চাকরি পাননি, কেন টাকা দেবেন বলে পাল্টা প্রশ্ন করে বাড়ি ফিরে আসেন চয়নিকা। এরপর অয়ন শীলের লোক তাঁর সঙ্গে আবার যোগাযোগ করেন এবং সল্টলেকে অয়নের অফিসে যেতে বলেন। তারপর চয়নিকা সল্টলেকের অয়নের অফিসে বাবাকে নিয়ে যান। কিন্তুস বেশ কয়েক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা না পেয়ে ফিরে আসেন। পরে জানতে পারেন প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে অয়ন শীলের বিরুদ্ধে।

এদিকে, হাল না ছেড়ে টিটাগড় পুরসভায় গিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন চয়নিকা। তারপর অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে অবশেষে কাজে যোগদান করেন তিনি। বেতনের জন্য স্থানীয় বেসরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্সে অ্যাকাউন্ট খোলা থেকে এটিএম কার্ড করে দেওয়া হয়। ৬ দিন কাজও করেন পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসাবে। তারপর তাঁকে অকারণে পুরসভা থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
চয়নিকা বলেন, “নিয়োগ তালিকায় তাঁর ২২০ নম্বরে নাম ছিল। রাতারাতি সেই তালিকা পরিবর্তন করে যাঁদের নাম ছিল না, তাঁদের নাম ঢু্কিয়ে দেওয়া হয়।” যাঁরা টাকা দিতে পেরেছিলেন, তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর মতো যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি চয়নিকার। এর পিছনে অয়ন শীল এবং নিয়োগ দুর্নীতি চক্র জড়িত বলে অভিযোগ তাঁর। কিন্তু, সেই সময় বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে সমস্যা চলছিল চয়নিকার। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, মা রয়েছেন। তাই প্রাণভয়ে এই বিষয়ে মুখ খুলতে পারেননি বলে জানান চয়নিকা।

তবে এবার চয়নিকার পাশে দাঁড়িয়ে আইনি পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয় বিজেপির তরফে। ভাস্কর ভট্টাচার্য নামে এক আইনজীবী এবং তাঁর সঙ্গে চুঁচুড়া কোর্টের এক আইনজীবী চয়নিকার বাড়িতে গিয়ে তাঁর চাকরি সংক্রান্ত সমস্ত নথি-পত্র খতিয়ে দেখেছেন। তাঁরা বলেন, “চয়নিকা চাকরি পেয়েও টাকা না দিতে পারায় তাঁর চাকরি হয়নি। তার যাবতীয় প্রমাণ রয়েছে। এই কেসে মেরিট আছে। এতদিন টাকার অভাবে তিনি এই ঘটনার কোনও আইনি পদক্ষেপ ও করতে পারেননি। কিন্তু আমরা ওনাকে বিচার পাইয়ে দিতে যতদূর যেতে হয় যাব।”

ইডি তদন্তে জানা গিয়েছে, অয়ন শীলের সংস্থা পানিহাটি সহ বেশ কয়েকটি পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল। তাঁর অফিস থেকে ইডি বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার ওএমআর শিট উদ্ধার করেছে ইতিমধ্যে। এছাড়া স্কুল সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা ও বহু মানুষকে প্রতারিত করার অভিযোগ রয়েছে হুগলির প্রাক্তন তৃনমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রমোটার অয়ন শীলের বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি ইডি হেফাজতে রয়েছেন।

Next Article