বালুরঘাট: আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তবে তার আগে বালুরঘাট ব্লকের ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করল বিজেপি৷ সোমবার বিরোধী-শূন্য তলবি সভায় বিজেপি পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করে এবং প্রধান হন বিজেপির রিস্তারা সংসদের সদস্যা চন্দনা পাহান। বলা যায়, কয়েক মাসের জন্য বোর্ড গঠন করল বিজেপি। তবে কয়েক মাসের জন্য প্রধান পদে বসলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে কাজগুলি বাকি রয়েছে, সেগুলি সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চন্দনা পাহান৷
এদিন এই তলবি সভাকে ঘিরে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিল পুলিশ প্রশাসন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে দিনভর উপস্থিত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে বিরোধী তৃণমূল বা বামেদের কোনও প্রতিনিধি ওই তলবি সভায় উপস্থিত না হলেও বিজেপির সদস্যরা তলবি সভায় গিয়ে নতুন প্রধান নির্বাচন করেন। দলের মধ্যে থেকে প্রধান নির্বাচিত হওয়ায় আনন্দে মেতে ওঠেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। গেরুয়া আবীর খেলে মিষ্টিমুখ করে আনন্দ-উল্লাসে মাতেন ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান চন্দনা পাহান, বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।
প্রসঙ্গত, ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি মহিলাদের জন্যে সংরক্ষিত। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওই পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন প্রধান মল্লিকা কর্মকার সূত্রধর। এরপর থেকেই ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব ছিল উপপ্রধান সুভাষ সরকারের হাতে। এদিন অবশেষে স্থায়ী প্রধান পেল ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত। এবিষয়ে বিজেপির উপপ্রধান সুভাষ সরকার বলেন, “বিদায়ী প্রধানকে সরাতে আমরা আগেই অনাস্থা এনেছিলাম। তার আগেই ইনি ইস্তফা দিয়ে আমার হাতে চার্জ দিয়েছিল। প্রধানের পদে দাবিদার দুইজন ছিল। অবশেষে আজকে সকল পঞ্চায়েত সদস্য মিলেই চন্দনা পাহানকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছি।”
এবিষয়ে বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “বিজেপির সদস্য বেশী থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন মৃত সদস্যকে জীবিত দেখিয়ে অনাস্থা বাতিল করে। অবসেষে হাইকোর্টের নির্দেশে বিজেপির প্রধান হওয়ায় সকলে খুশি।”
মল্লিকা কর্মকার সূত্রধর বিজেপিরই সদস্য। যদিও তাঁর উপর বিরক্ত জেলা নেতৃত্ব বারবার তাঁকে অপসারিত করতে চেয়ে অনাস্থা এনেছে বিজেপি। কিন্তু বারবার বিফলতার মুখ দেখতে হয়েছে তাদের। শেষ পর্যন্ত গত জানুয়ারি মাসে ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বিজেপি সদস্যরা। কিন্তু ওই দিন তলবি সভায় তাদের ১১ জন সদস্যকে দেখাতে পারেনি বলে ওই সভা মুলতবি হয়ে যায়। নিজেদের প্রধানের উপর বিরক্ত বিজেপি প্রশাসনের উপরেও ক্ষোভ ব্যক্ত করে। এমনকি ওই দিনই বিজেপির জেলা পরিষদের মন্ডল সভাপতি সুভাষ সরকার বিডিও অফিসে গিয়ে তাঁর চেম্বারে ঢুকে আচমকা হামলা চালান বলে অভিযোগ। ৫২ দিন জেলা হেফাজতে থাকার পর কয়েক দিন আগেই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ছাড়া পেয়েছেন সুভাষ সরকার। এদিকে, ডাঙা নিয়ে বিডিও পক্ষপাতিত্ব করছেন এই অভিযোগ তুলে বিজেপি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি, ফের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার তলবি সভার দিন ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগে অভিমানে নিজেই পদত্যাগ করেন বলে জানান প্রধান মল্লিকা কর্মকার সূত্রধর।