আসানসোল: কয়লা দুর্নীতিকাণ্ডে ইসিএলের প্রাক্তন জিএম অমিত কুমার ধর, দুই কয়লা কারবারি শ্রীমন্ত (বাপি) ঠাকুর ও বিদ্যাসাগর দাস জেল হেফাজতে পাঠানো হল। শনিবার তাঁদের আসানসোল সিবিআই আদালতে তোলা হলেও জামিনের আবেদনই করেননি ধৃতদের আইনজীবি। তবে ধৃতদের মেডিক্যাল ব্যাক গ্রাউন্ড দেখিয়ে জেলে কিছু বিশেষ ব্যবস্থার আবেদন করা হয়।
গত মঙ্গলবার তিনজনকে কয়লাকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ২৬ তারিখ আদালতে তোলা হলে হেফাজতে পায় সিবিআই। শনিবার ফের আদালতে তোলা হলে আদালত জানতে চায়, ধৃতদের তিনদিন হেফাজতে রেখে কতদূর অগ্রগতি হল?
সিবিআইয়ের আইনজীবি বিচারককে জানান, ধৃতরা তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। তবে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গিয়েছে বলে সিবিআই আদালতে জানায়। তাঁদেরও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অভিযুক্তদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। ৩ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়। এদিকে ৩ জুলাই আবার কয়লাকাণ্ডের ফাইনাল চার্জফ্রেম করার দিন। চার্জশিটে নাম রয়েছে ৪৩ জনের। এরমধ্যে একজন মারা গিয়েছেন।
বিনয় মিশ্র ফেরার। সুতরাং সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৪১ জনের উপস্থিত থাকার কথা। ওইদিনই এই মামলা সংক্রান্ত সব অভিযুক্তদের শুনানির দিনও ধার্য হয়েছে। ফলে নজরে আসানসোল সিবিআই আদালত।
কয়লা দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআরে প্রথম নাম ছিল ইসিএলের প্রাক্তন জিএম অমিতকুমার ধরের। জেসি রায় বলে আরও একজনের নাম আছে। সিবিআই এখনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। কিন্তু চার বছর ধরে কেন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক।
আইনজীবী শেখর কুণ্ডু বলেন, “এই একই ঘটনায় কয়েকদিন আগে ইসিএলের আরেক প্রাক্তন জিএম এবং কয়লা কারবারি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁদের জামিনের আবেদন করা হলে তা খারিজ হয়ে যায়। তাঁরা জেল হেফাজতে যান। তাই একই মামলায় আমরা জামিনের আবেদন করলাম না। কারণ তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়ে যেত। যেহেতু ৩ জুলাই ফাইনাল চার্জ গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ৩ তারিখে আবার তাঁদের হাজিরার সম্ভাবনা থাকছে।”
কয়লা কাণ্ডের চার্জ গঠন করতে মরিয়া আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালত। সাড়ে তিন বছর ধরে মামলা চলছে। বহু অভিযুক্ত এক বছরের বেশি সময় জেল খেটেছেন। বিচারকের পর্যবেক্ষণ, এখনও ট্রায়াল শুরু না করা গেলে বিচারপ্রার্থীর প্রতি অবিচার হবে। তাই বার বার তিনি সিবিআইকে মামলা চূড়ান্ত পরিণতিতে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। অল্প ঢিলেমি দেখলেই সিবিআইকে ভর্ৎসনা করতেও ছাড়ছেন না। শনিবারই ছিল চার্জ গঠনের আগের শেষ শুনানি। তাই বাকি অভিযুক্তদেরও একইদিন মামলার শুনানি ধার্য করেন তিনি।