নয়া দিল্লি: বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বড় ধামাকা নরেন্দ্র মোদী সরকারের! লক্ষ্মীবারেই রাজ্য সরকারের কোষাগারে ঢুকল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা। গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা পেল রাজ্য। মোট ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির জন্য এই টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।
জানা গিয়েছে, ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির জন্য খরচ হবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে মোট খরচের ৪০ শতাংশ দেবে রাজ্য এবং ৬০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র। সেই অনুসারেই ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্যকে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা দিল কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনার টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কেরা। এই দোষারোপ, শাসক-বিরোধী দলের তরজার মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা দেওয়ার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যমূলক। এই টাকা পাঠানোর পিছনে পঞ্চায়েত ভোট বড় ‘ফ্যাক্টর’ বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তাঁদের মতে, কেন্দ্রের তরফে আবাস যোজনার টাকা পাঠানোর ঘটনায় বিজেপির হাতে বড় তাস এল। বিশেষত, বুধবার পুরুলিয়ার জনসভায় মিঠুন চক্রবর্তীর আবাস যোজনায় ঘর দেওয়া নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরদিনই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের কোষাগারে টাকা ঢোকার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, বুধবার পুরুলিয়ার লুধুড়কা গ্রামের জনসভায় উপস্থিত সকলের সমস্যার কথা জানতে চান বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তখন অনেকেই আবাস যোজনার ঘর না পাওয়ার কথা জানান মহাগুরু-কে। কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। তাঁদের আশ্বস্ত করে মহাগুরু মিঠুন বলেন, “সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর- সব পাবেন। কেউ বঞ্চিত হবেন না।”
পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজের টাকা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ার জন্য নাম না করে রাজ্য সরকারকেই দোষারোপ করেন মিঠুন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ঘর দেওয়ার জন্য আবাস যোজনা করেছেন। কিন্তু এখানে কাকে টাকা পাঠাবে? এরা সবাই তো নিয়ে বসে আছে। কেন্দ্র তার জন্য হিসাব চেয়েছে। কিছুদিনের জন্য টাকা আটকে রেখেছে। হিসাব দিলেই টাকা দিয়ে দেবে।”
মহাগুরুর এই প্রতিশ্রুতির পরদিনই কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের কোষাগারে আবাস যোজনার টাকা আসার ঘটনা যে বিজেপিকে বড় ‘তাস’ দিল, তা বলা বাহুল্য। অন্যদিকে, আগামী ৫ ডিসেম্বর দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার আগেই কেন্দ্রের তরফে আবাস যোজনার টাকা পাঠানোর ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ। তবে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আসার ঘটনা রাজ্য সরকারের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে অনেকেরই মত।