বরাহনগর: এক রোগীর মৃত্যু ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল বরাহনগরের (Barahnagar) এক বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসার গাফিলতিতেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি রোগীর মৃত্যুর পরেও সেই খবর পরিবারকে জানানো হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। শুক্রবার দুপুরে এই অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর পরিবারের লোকজন। বিক্ষোভ-উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বরাহনগর থানার পুলিশ (Barahnagar Police)। তারপর বিশাল পুলিশ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
পুলিশ জানায়, মৃতের নাম জয়ন্ত কুণ্ডু (৪২)। বরাহনগর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত প্রিয়নাথ চক্রবর্তী লেন এলাকার বাসিন্দা জয়ন্ত কুণ্ডু পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে বুকে ব্যথা নিয়ে তিনি ভর্তি হন বরাহনগর গোপাল লাল ঠাকুর রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই এদিন দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসায় গাফিলতিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত জয়ন্ত কুণ্ডু সুস্থ ছিলেন। তবে তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। সকাল ৯টার পর থেকে আর কোনও ডাক্তার তাঁকে দেখেননি। বারবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে জানানো হলেও কোনও চিকিৎসক তাঁকে দেখেননি বলে অভিযোগ। মৃতের বোন পূবালী কুণ্ডু বলেন, “দাদাকে কাল রাতে কয়েকটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা হয়েছিল। কিন্তু, আজ সকাল থেকে কোনও ডাক্তার দেখতে আসেনি। বারবার বললে আশ্বাস্ত করা হয়, ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়েছে, এক্ষুণি আসবে। তারপর দুপুর পর্যন্ত না আসায় আবার খোঁজ করলে জানানো হয়, দাদা মারা গিয়েছে। কখন, কী ভাবে দাদা মারা গেল, কোন ডাক্তার চিকিৎসা করল, কী চিকিৎসা হয়েছে আমরা কিছু জানি না।” গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। হাসপাতাল চত্বরেই তীব্র বিক্ষোভ দেখান জয়ন্ত কুণ্ডুর পরিবারের লোকজন। বরাহনগর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। এরপর পুলিশ গোটা ঘটনাটি তদন্তের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের পাল্টা দাবি, জয়ন্ত কুণ্ডু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সমস্ত রকমের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। পরিবারের যদি কোনও অভিযোগ থাকে পুলিশ তা তদন্ত করবে। সেই তদন্তে যদি হাসপাতালে কারওর গাফিলতি প্রমাণ হয়, কর্তৃপক্ষ তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বরাহনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে।