মাথাভাঙা : অমিত শাহের সফরের মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই উদ্ধার সকেট বোমা। বুধবার সকালে কোচবিহারের মাথাভাঙা থেকে সকেট বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। আগামিকাল ৫ মে বাংলা সফরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর ৬ মে, শুক্রবার কোচবিহারের তিনবিঘা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা তাঁর। তার আগেই এই বোমা উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে যখন গোটা এলাকা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে, তার মধ্যে কারা এ ভাবে সকেট বোমা ফেলে রেখে গেল, তাপ হদিশ পেতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে মাথাভাঙা থানার অন্তর্গত হাজরাহাট ২ নম্বর নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব খাটেরবাড়ি এলাকাযর জঙ্গলে সক্রিয় তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মাথাভাঙা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ গিয়ে সেই তাজা সকেট বোমা উদ্ধার করে মাথাভাঙা থানায় নিয়ে যায়।
৫ মে রাজ্যে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বঙ্গ সফরে একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। ৫ তারিখ প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন তিনি। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেবেন তিনি। ওই দিনই দুপুরে তিনি যাবেন শিলিগুড়িতে। সেখানে একটি রোড শো করতে পারেন অমিত শাহ। এরপর একটি জনসভাও হবে শিলিগুড়িতে। ৫ মে রাতে শিলিগুড়িতেই থাকবেন তিনি। এরপর ৬ মে সকালে অমিত শাহ যাবেন তিনবিঘা এলাকা পরিদর্শনে। সেখান থেকে ঘুরে দুপুরে ফিরবেন কলকাতায়।
তিন বিঘায় আসছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী ৬ তারিখ সকালে বাগডোগরা থেকে হেলিকপ্টারে তিনি তিনবিঘায় আসবেন বলে জানা গেছে। তিনবিঘায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আধিকারিকদের সাথে তিনি একটি বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
ভারতের সীমান্তবর্তী এই তিনবিঘার গুরুত্ব দুই দেশের কাছে অপরিসীম। ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা মুজিব চুক্তির পর বিতর্কিত বেরুবাড়ি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। অপরদিকে বাংলাদেশের দুটি ছিটমহল দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্যে তিনবিঘা করিডর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের তিনবিঘায় একটি রাস্তা তৈরি করে সেই রাস্তা বাংলাদেশিদের চলাচলের জন্যে খুলে দেওয়া হয় ১৯৯২ সালে। ৯৯ বছরের জন্যে লিজ দিয়ে সেই রাস্তা তৈরি হয় যা দিয়ে চলাচল করেন বাংলাদেশিরা। এই জায়গা তিনবিঘা করিডর নামে পরিচিত।
তবে স্থানীয় মানুষরা এই তিনবিঘা করিডরের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন সেই সময়ে। আন্দোলন তীব্র হয়। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যুও হয় কয়েকজনের। বর্তমানে সাধারণ মানুষ চাইছেন কাঁটাতারের ওপারে যে সব জমি রয়েছে সেই সব জায়গায় তাঁরা যেন নির্বিঘ্নে চাষ আবাদ করতে পারেন। চোরাচালানের জন্যে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট এই এলাকায়। তাঁরা চাইছেন এসব যেন বন্ধ হয়।