কোচবিহার: দেখতে রাজবাড়ির মতো। হবে নাই বা কেন। রাজা জিতেন্দ্র নারায়ণের মেডিক্যাল কলেজ বলে কথা। কিন্তু এখানে দুর্নীতির পোকা কামড় বসিয়েছে। একাধিক বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ টাকা ঢুকছে অন্য কারও পকেটে। অভিযোগে কাঠগড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর খাবারের হিসাবে গরমিলের অভিযোগ। কম খাবার দিয়ে বেশি বিল বানানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিছানার চাদর নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। বেআইনি ভাবে টেন্ডার রিনিউয়ালের অভিযোগও রয়েছে। এর পাশাপাশি নার্সিং স্টাফদের উপর ভুয়ো বিল তৈরির জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমআরআই-এও দুর্নীতির অভিযোগ।
হাসপাতালের এই দুর্নীতির চাকে প্রথম ঢিল মারেন হাসপাতালের ফিনান্স অফিসার। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর পর বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এর পর শুরু হয় তদন্ত। তাতে গরমিল দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়।
কোচবিহারের এই হাসপাতালের উপর কেবল কোচবিহারবাসী নয়, সীমান্ত লাগোয়া অসমের মানুষও ভিড় জমান। সেখানেই দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত নেমে তদন্তকারীদের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের পর্যবেক্ষণ ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর, এই ৯ মাসে রোগীদের খাবারের বিলে ৫ লক্ষ টাকারও বেশি গরমিল হয়েছে বলে অভিযোগ। খাবারের টেন্ডারের স্বজন পোষণের অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে শয্যা বাড়েনি। কিন্তু বিছানার চাদরের বিল কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায় বলেছেন, “এই মেডিক্যাল কলেজের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই ভিত্তিতেই তদন্ত করা হচ্ছে। অডিট করা হচ্ছে। তদন্তের রিপোর্ট জমা পড়লে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।” যার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় সেই এমএসবিপি রাজীব প্রসাদ বলেছেন, “অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে যে কেউ করতে পারে। আমার অফিসে টাকা মঞ্জুর কে করে? আমি তো করি না। সেখান থেকেই গরমিল হয়েছে।”