কোচবিহার: পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম থেকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন একই পরিবারের দু’জন। সিপিএমের প্রার্থী হওয়ার অপরাধে ওই পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করার অভিযোগ উঠল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আগেই বক্সিরহাট থানার দ্বারস্থ হয়েছিল ওই পরিবার। অভিযোগ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েও হয়নি কোনও সুরাহা। উল্টে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য ওই পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবার দলীয়ভাবে পথে নামল সিপিএম। দলীয় কর্মীর পরিবারকে সামাজিক বয়কট করার অভিযোগ তুলে বুধবার তুফানগঞ্জ-২ নম্বর বিডিও ও মহকুমা শাসকের দপ্তরে স্মারকলিপি জমা দেন সিপিএমের বক্সিরহাট এরিয়া কমিটির সদস্যরা।
তুফানগঞ্জ-২ নম্বর ব্লকের মহিষকুচি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকোয়ামারি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা তথা দীর্ঘদিনের সিপিএম কর্মী গনি মিঞা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির পদে দাঁড়িয়েছিলেন গনি মিঞার ছোটো ছেলে তারিক মিঞা। তাঁর বড় ছেলের স্ত্রী পারভিনা বিবি আবার সিপিএমের হয়ে মহিষকুচি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩২ নম্বর বুথের পঞ্চায়েতের প্রার্থী হন। যদিও নির্বাচনের ফল প্রকাশের দেখা যায় ওই দুটি পদেই জয়লাভ করেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মহিষকুচি-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে রাজ্যের শাসকদল।
বোর্ড গঠন হতেই আচমকা গনি মিঞার বাড়িতে চড়াও হয় এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ, সিপিএমের দলের হয়ে প্রার্থী হওয়ার অপরাধে বন্ধ করে দেওয়া হয় তাঁদের দুটি ট্রাক্টর। প্রতিবেশীদের বাড়িতে যাতায়াত করতেও নিষেধ করা হয়। জমিতে চাষাবাদ, বাজার ঘাট সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
এ ব্যাপারে ওই সিপিএম সমর্থক গনি মিঞা জানান, তিনি পুরনো সিপিএম কর্মী। সেই সুবাদে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দল তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূকে প্রার্থী করেন। তবে বোর্ড গঠন পর্ব মিটতেই তাঁর বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে তাঁদের সম্পূর্ণভাবে সামাজিক বয়কট করেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা।
এই বিষয়ে গনি মিঞার পুত্রবধূ তথা সিপিএমের প্রার্থী পারভিনা বিবি বলেন, “শুধুমাত্র সিপিএম থেকে প্রার্থী হওয়ার অপরাধে তাঁদের বাজার ঘাট, চাষাবাদ, প্রতিবেশীদের বাড়িতে যেতেও নিষেধ করেছেন তৃণমূল নেতারা। গোটা ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি।” উল্টে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য আরো আক্রমণ বেড়েছে বলেই দাবি তাঁর। ঘটনার পর থেকে খুবই আতঙ্কে রয়েছে তাঁদের পরিবার। যদিও এই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলেই মত স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ফুল চাঁদ বর্মণ বলছেন, “যে অভিযোগ ওরা করছে পুরোটাই মিথ্যা। তৃণমূল এই জাতীয় কাজ কখনওই করে না।”