দিনহাটা: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি চায় না তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবারই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। ‘গায়ের জোরে’ দলীয় নেতা-কর্মীরা যাতে অন্য দলের কাউকে প্রার্থী হতে না দেন, সেই ক্ষেত্রে তিনি নিজে এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় সেই প্রার্থীর মনোনয়ন করিয়ে দিয়ে আসবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। একদিন পরই দিনহাটায় দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী উদয়ন গুহ প্রশ্ন তুললেন, “বিরোধীরা সব আসনে প্রার্থী দিতে না পারলে সেই দায় কার?” তিনি জানান, বিরোধীরা যদি প্রার্থী দিতে পারে তবে অবশ্যই ভোট হবে। সেই সঙ্গে প্রার্থী হতে না পারার কারণে দলের কেউ নির্দল প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়বেন না বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “গত ৫ বছরে তোর্ষা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে।”
এদিন বিরোধী-শূন্য করে ভোট করার প্রসঙ্গে উদয়ন গুহ বলেন, “ওরা (বিরোধীরা) যদি প্রার্থী দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে পারে, তাহলে তো ভোট হবেই। কিন্তু, কেউ যদি প্রার্থী হতে না চায়, তাহলে তো তাকে কোমরে দড়ি দিয়ে এনে প্রার্থী করা যায় না। সেটাই আমি বলতে চেয়েছি। যদি বিরোধীরা প্রার্থী পায়, তাহলে ভোট হবে। এখন এসইউসিআই যদি সব কটি আসনে প্রার্থী দিতে চায়, সম্ভব নয়। কংগ্রেস, ফরওয়ার্ড ব্লক, এমনকি বিজেপিও অন্য দল থেকে ধার না করলে, উচ্ছিষ্টদের না নিলে সব আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না। তা, এর দায়িত্ব কার?”
সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিষয়ে দলের জেলা সভাপতি, বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল সাংগঠনিক বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সি। সেই বৈঠকের শুরুতেই দলীয় কর্মীদের গায়ের জোরে ভোট না করানোর বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে সুব্রত বক্সি জানান, তার মাশুল পরবর্তী লোকসভা ভোটে দিতে হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমরা ১৮টি আসন কম পেয়েছিলাম। এবার তেমন করা যাবে না। যদি ভাবেন গায়ের জোরে, অন্য কাউকে প্রার্থী হতে দেব না তাহলে ভুল ভাবছেন। আমি আর অভিষেক গিয়ে সেই প্রার্থীর মনোনয়ন করিয়ে দিয়ে আসব।’
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু আসনেই বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, এবার তা হবে না বলে আত্মবিশ্বাসী উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “১৮ আর ২৩ সালের মধ্যে ৫ বছরের ফারাক। বানিয়াদা, তোর্ষা – এইসব নদী দিয়ে ৫ বছরে অনেক জল বয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, “বিক্ষুব্ধ তৃণমূল বলে কিছু নেই। তবে নির্দল প্রার্থী হতেই পারে। কারণ নির্দলও একটা দল। তারা প্রার্থী দেবে, ইচ্ছা হলেই দেবে।”