কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রী
Image Credit source: Facebook
লোকসভা ভোটের আগে ৫ দিনের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গে রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রার মধ্যেই উত্তরবঙ্গে সভা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। রবিবার হাসিমারা হয়ে কোচবিহার পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি ফিরে পাট্টা বিলি করেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক সরকারি প্রকল্পের সূচনার পাশাপাশি কোচবিহারের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। রামমন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ খোলেন CAA, NRC নিয়েও। দেখে নিন এক নজরে কী কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী…
KEY HIGHLIGHTS
- ২০১৫ সালের পর কোচবিহারে নাকি কোনও ভ্যালুয়েশন বোর্ড তৈরি হয়নি। তাই যাঁদের বাড়িতে নোটিস যাচ্ছে, তাঁরা এখন নোটিস পেয়ে কিছু করবেন না। কোনও ট্যাক্স এখন বাড়়বে না।
- আমি কিন্তু সেলফ হেল্প গ্রুপের অনেক কাজ করে দিই। কিন্তু আমি শুনেছি, কোচবিহারের অনেক জায়গায় এমন অনেক সেলফ হেল্প গ্রুপ রয়েছে, যারা গোপনে অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। তাঁদের বলব আমাদের সঙ্গে থাকুন। কাজ করতে অসুবিধা হলে আমি দেখে নিচ্ছি।
- ৫০০ কোটি টাকার ১৯৮ টি প্রকল্পের উদ্বোধন শিলন্যাস করা হল। মহাবীর ১৫ ফুট উঁচু ব্রোঞ্জের মূর্তি এক কোটি টাকা খরচ করে করেছি, সেটা উদ্বোধন হল।
- মাথাভাঙ শীতলকুচি রাস্তায় উন্নয়নের জন্য ২৯ কোটি টাকা. গোপালপুরে কমিউনিটি হল, ১ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা।
- অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার, গ্রামীণ রাস্তা, কমিউনিটি হল, ক্ষুদ্র শিল্প প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়েছে। দিনহাটা গোসাইমারা রাস্তা ১৬ কোটি টাকা খরচ করে করা হচ্ছে। মেখলিগঞ্জ চ্যাঙড়াবান্দা রাস্তা ২১ কোটি টাকা। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ২ কোটি টাকা।
- কোচবিহারে মেডিক্যাল কলেজের জন্য ২৫ একর জমিও দিয়েছি। ২ কোটি লক্ষ্মীর ভান্ডার পান। আরও ১৩ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারে যুক্ত হবেন। ১০লক্ষ ওল্ড এজ পেনশন পান।
- অসময়ের বৃষ্টিতে চাষিদের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ চাষিকে ১০২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
- মেধাশ্রী শুরু করেছে। ১০ লক্ষ টাকা করে স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে।
- একশো দিনের কাজের টাকা দেয় না। আমি তিন থেকে চার বার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। বাংলা আবাস যোজনা। আমরা অর্ধেক দিই, ওরা অর্ধেক দেয়। সেই টাকাও জিএসটি দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এখন সেটাও বন্ধ। পথশ্রীতে ১২ হাজার রাস্তা করেছি। আরও ১২ হাজার গ্রামীণ রাস্তা হবে পথশ্রীতে। রাজ্য জুড়ে বাংলার সহায়তা কেন্দ্র চলছে। কারোর কাস্ট সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়, তাহলে ১২ তারিখ পর্যন্ত স্টেশনে আধিকারিকরা থাকছেন। পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও থাকবেন।
- উত্তরবঙ্গে কী করি না আমরা। ধূপগুড়ি সাব ডিভিশন চেয়েছিল, করে দিয়েছি। কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কোচবিহার রাজবাড়িকে সম্মান জানিয়ে মেডিক্যাল কলেজের নাম রাখা হয়েছে। ২৫ একর জমি আমরা দিয়েছি।
- ছিটমহল হস্তান্তর করে দিয়েছি, কোচবিহার বিমানবন্দর করে দিয়েছি ৩০০ কোটি টাকায়। হলদিবাড়ি মেখলিগঞ্জের মধ্যে জয়ী সেতু করেছি।
- ৩৪ বছর বামফ্রন্ট ছিল কিছু করেছে? কোচবিহারের মানুষকে দেখত? আগেরবার বিজেপির সাংসদ জিতল, কী করেছে? আমি করে দিলাম এয়ারপোর্ট আর বাবু প্লেন চরে এসে বলছে আমি করেছি? জমিদার বাবু?
- ওরা তো একদিন ঘাস পুঁতেও দেখেনি, ঘাস কীভাবে পুঁততে হয়! জল প্রকল্পে বলছে, ‘হাম নে ঘর ঘর মে জল দিয়েছি’! আমি বলি, কত টাকা দিয়েছেন? ২৫ শতাংশ দিয়েছে। আর বাকি আমরা দিয়েছি।
- মদন মোহনের কথা মনে আসে না, দুর্গা, লক্ষ্মী, কারোর কথা মনে আসে না। ওরা যে চাপিয়ে দেবে, সেটাই আমাদের দেবতা! আমি তো কিছু বলি নি। ধর্ম যার যার, দেবতা সবার।
- আমাকে শেখাতে হয় না। আমাদের শেখানো হয়েছে সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। আমাদের হাতে পাঁচটা আঙুল রয়েছে, কোনটা ছোট, কোনটা বড়। ১০০ ভাগ লোকের মধ্যে ১ ভাগ খারাপ কাজ করলে, আইন ব্যবস্থা নেবে। তার জন্য আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, আমাকে বলছে চোর। ওঁ তো একজন ডাকাত। সার্টিক হাউজে থাকলে ভাড়াটাও দিয়ে দিই। এক পয়সার চা কারোর কাছ থেকে খাই না। মিথ্যা কথা বললে, জিভ খসে পড়বে।
- কত মাজান আছে, শশ্মান আছে। ওরা মনিপুরে ২০০ চার্চ পুড়িয়ে দিয়েছেন। মহিলাকে নগ্ন করে অত্যাচার করেছে। বড়দিনের ছুটি বাতিল। নেতাজির জন্মদিনে নেতাজির জাতীয় দিবসে ছুটি দিল না। ওরা কিছু করবে বলে ঢাক ঢোল পিটিয়ে ছুটি দিল। আমি সেটা মানতে পারব না।
- দুটো তফসিলি মেয়ে রয়েছে আমার বাড়িতে। আমার বিছানায় শোয়। আমি ইচ্ছা করে ভোটের সময়ে রাস্তা থেকে খাবার কিনে এনে তফসিলির বাড়িতে বসে খাচ্ছি বলে নাটক করি না।
- ইকোনমিক করিডর তৈরি হবে। সেখানে অনেক ছেলেমেয়েদের চাকরি হবে। ২৮ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক নাম লিখিয়েছেন। তাঁরা যদি কোনও বিপদে পড়েন, তাঁদের আমরা ফিরিয়ে আনব। শুধু ভোটার লিস্টে নামটা তুলে রাখুন। কেউ NRC বলে যাতে বাদ না দিয়ে দেয়। সকলেই সব সুবিধা পায়। নাগরিক না হলে ভোট দিতে পারত? সরকারি সুবিধা পেত? শীতলকুচির কথা মনে রয়েছে? যখন তখন গ্রামে ঢুকে গুলি করে দেয়! যেন জমিদারি পেয়ে গিয়েছে। যদি কখনও এরকম গ্রামে গ্রামে অত্যাচার করে, সঙ্গে সঙ্গে থানায় FIR করবেন, এটা মাথায় রাখবেন। ওরা ভয় দেখিয়ে ভোট করতে চায়, এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ভোট করতে চায়। বলে, শোন না আমাদের সঙ্গে না এলে তোর বাড়িতে ইডি পাঠিয়ে দেবে। শীতলকুচি কেসে কীভাবে বেল পেল? খুনি যদি বেল পায়, মানুষ বিচার পাবে কোথা থাকে? বিজেপি করলে চোরগুলোকে ঢুকিয়ে দিচ্ছে ওয়াশিং মেশিনে।
- অনেকগুলো ছোট ছোট রাজবংশী স্কুল ছিল। কিন্তু সেগুলোর একটাও গর্ভমেন্টের মাইনে পেত না। নিজেরা লোকালি চালাত। তারা কোনও সুযোগ পেত না। আজকে ১০টা রাজবংশী স্কুলকে রাজ্য সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে গেলাম।
- নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি। গোর্খা ব্যাটেলিয়ন, জঙ্গলমহল ব্যাটেলিয়ন করে দিয়েছি।
- বিএসএফের অত্যাচারে মানুষ তটস্থ। সীমান্তে আলাদা আইডেনটিটি কার্ড দিতে চায়। নেবেন না সেই কার্ড। বলবেন আমাদের আধার কার্ড রয়েছে, রেশন কার্ড রয়েছে। ওই কার্ড যদি নেন, তাহলে NRC তে পড়ে যাবে। সব বাদ চলে যাবে। বিপদে পড়লে আমি আছি। বাঘের বাচ্চার মতো আছি।
- সম্প্রীতি করতে চায় না। আমি করব। যে জাতিই হোক, ভাষা হোক, আমরা করব। আজ ১০ হাজার চা বাগানেপ শ্রমিকদের পাট্টা দেব।
- সীতার নাম ভুলে গিয়েছে। কৌশল্যা মায়ের নাম ভুলে গিয়েছে। মা ছাড়া সন্তানের জন্ম দেয় কে, বউ ছাড়া স্বামীকে এগিয়ে দেয় কে? আমার মা-বোনেরা সন্তানের গর্ব। আমরা জন্মে নাম পাই, সারনেম পাই। কিন্তু ওটা থাক। উৎসব সবার।
- আমি বাংলা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ৪০ শতাংশ একশো দিনের কাজ করেছি।