উত্তর ২৪ পরগনা: ভোট-ষষ্ঠীর সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল জেলার রাজনৈতিক আবহ। কোথাও গুলি চলেছে, কোথাও আবার সংর্ঘষ হয়েছে শাসক-বিরোধী শিবিরে। কিন্তু এই সব কিছুর মধ্যেও উত্তর দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য যে সৌজন্যের নজির স্থাপন করেছেন, বর্তমান রাজনীতিতে তা বিরল বললেও কম বলা হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাম্পে হাজির হয়ে রীতিমতো আড্ডা দিতে দিতে লুচি তরকারি খেলেন তিনি। এরপর খোশ মেজাজে জানালেন, আসলে এভাবে মিলেমিশে থাকাটাই নিউ বারাকপুর এলাকার মানুষের সংস্কৃতি। যেখানে রাজনৈতিক পরিচিতি দেওয়াল হয়ে ওঠে না।
মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবেই এ দিন ভোট হয় উত্তর দমদম বিধানসভা কেন্দ্রে। সকাল থেকেই বুথে বুথে ঘুরছিলেন এলাকার বিদায়ী বাম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। আচমকাই নিউ বারাকপুরের সপ্তগ্রাম এলাকায় তৃণমূলের একটি ক্যাম্পে গিয়ে হাজির হন তিনি। তন্ময়বাবুকে দেখে অবশ্য অবাক হননি বুথে উপস্থিত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। সেখানে গিয়েই তিনি জানতে চান, কী খাবার রয়েছে। সামনে থাকা দুই মহিলা তাঁর হাতে তুলে দেন লুচি তরকারির প্যাকেট। সেই প্যাকেট খুলতে গিয়ে মজার ছলে বলে ওঠেন, “একদম নিষ্ঠুর আচরণ, একটাও মিষ্টি রাখেনি।” পাশে থাকা জনৈক মহিলা বলে ওঠেন, “সবার সুগার। কেউ মিষ্টি খায় না।” হেসে বসে পড়ে সেই লুচি তরকারি খান তন্ময়বাবু।
আরও পড়ুন: সমস্ত রাজনৈতিক সমাবেশ বাতিল করলেন মমতা, কমিশনের নির্দেশিকার পরই সিদ্ধান্ত
খাওয়া-দাওয়া শেষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “রাজনীতিতে কেউ তৃণমূল, বিজেপি বা সিপিএম করতেই পারে। কিন্তু আমাদের এখানে পারস্পরিক সম্পর্ক খুব ভাল। সংস্কৃতি, রুচি এবং শিক্ষার দিক থেকে নিউ বারাকপুর পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে অগ্রসর এলাকা।” তন্ময়বাবুর এই কথা শুনে হাততালি দিয়ে ওঠেন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল সমর্থকেরাও। শাসকদলের এক কর্মী পাশে থেকে বলে ওঠেন, “আমি কিন্তু তৃণমূল কর্মী। আমি আর্শীবাদ নিলাম মাথার উপর হাত রেখে।” আরেক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “উনি আমার বাবার বয়সী। ওনার আর্শীবাদ আমাদের রাজনৈতিক জীবনে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে।”
আরও পড়ুন: শুক্রবারের বঙ্গ সফর বাতিল করলেন মোদী, হওয়ার কথা ছিল চারটি সভা
তবে কেবল ভোটের দিন বলে নয়। নির্বাচনী প্রচারের সময়ও তন্ময়ের এই রাজনৈতিক সৌজন্য নজর কেড়েছিল বিরোধীদের। গত মার্চ মাসে প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে গিয়ে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে মুড়িও খেয়েছিলেন তিনি। এ বার ভোটের দিনও দেখা গেল সেই চিরাচরিত সৌজন্য।