গঙ্গারামপুর: দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে চিকিৎসক ছাড়াই চলছে বুনিয়াদপুর শহরবাসীদের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। রোগী দেখা, ওষুধ দেওয়া সবেতেই সামলাচ্ছে এক জন নার্স। পুরসভা গঠনের আট বছর পর বুনিয়াদপুর শহরবাসীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে তৈরি হয়েছিল সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই কোনও চিকিৎসক। সবেধন নীলমনি একজন নার্সই হাসপাতালে পরিষেবা দিচ্ছেন। যা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বুনিয়াদপুরে। এদিকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
পীরতলার পুরনো পুরসভা ভবনের দোতালায় চালু হয় সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ২০২৩ সালের ১৩ ই জুন ঘটা করে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়। একজন ডাক্তার ও দু’জন নার্স দিয়ে শুরু হয় স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ। সাড়ে চার মাসের মধ্যে একজন নার্স ও ডাক্তার অন্যত্র স্থানান্তর হয়। নভেম্বর থেকে তিন মাস যাবত সেই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চলছে একজন মাত্র নার্স মৃণালিনী হেমরমকে নিয়ে। পুরনো রোগীর প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ দেওয়া, প্রেসার মাপা তিনটি রেজিস্টার সামলিয়ে রোগীর অসুধ বুঝে ওষুধ দেওয়ার মতোও কাজ করছেন একজন নার্স।
সেই নার্স রয়েছেন, তাঁকে প্রতিদিন ১১০ কিলোমিটার রাস্তা চলাচল করে এই পরিষেবা দিতে আসতে হয় বুনিয়াদপুরে। শুরুর দিন থেকেই শহরের প্রাণকেন্দ্র পিরতলায় পুরসভার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীদের চাপ ছিল যতেষ্ট। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৮০ জন রোগীকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হয় ওই নার্সকে। পুরনো রোগীরা প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে রিপিট ওষুধ নিতে কোন সমস্যা নেই। সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসা করতে আসা নতুন রোগীদের। শুধুমাত্র জ্বর, সর্দি ,কাশি, কাট , ইনজুরি হলেই নতুন রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন ওই নার্স থেকে।
বাকিদের সেই আগের মতো ৪ কিলোমিটার যাতায়াত করে রশিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে ছুটতে হচ্ছে পুরবাসীদের। সম্প্রতি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য চিকিৎসক এবং নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বেশ কয়েকজন নার্স আবেদনপত্র জমা দিলেও কোনও ডাক্তার আবেদনপত্র জমা করেননি। এও জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে মালদা জেলার এক ডাক্তার কে এই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। তিনি নাকি কর্মে নিযুক্ত হননি।
নার্স মৃণালিনী বলেন, “মহিলা চিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। আরেকজন নার্সও হাসপাতালে চলে গিয়েছেন। নতুন নিয়োগ এখনও তো হয়নি। পুরনো রোগীরা আসেন। প্রেসক্রিপশন দিয়ে গিয়েছেন চিকিৎসকরা, সেটা ওইভাবেই ওষুধ দিই। তবে নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে সর্দি, কাশি, জ্বর হলে ওষুধ দিয়ে দিই। বাকি বড় কোনও অসুখ করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।”
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক সুদীপ দাস বলেন, “আগে চিকিৎসক ছিলেন। আমি নিয়োগ করেছিলাম। আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চিকিৎসক পাইনি। আমরা ভীষণভাবেই চেষ্টা করছি।”