Balurghat: রায়ত জমিতেই অঙ্গনওয়াড়ি? বিডিও-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বালুরঘাটে

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Jul 06, 2022 | 6:49 PM

South Dinajpur: এই বিষয়ে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, এই নিয়ে কোনও অভিযোগ তিনি হাতে পাননি৷ বলেন, "আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। সরকারি অঙ্গনওয়াড়ির ঘর বা ভবন ভেস্ট ল্যান্ডে বানানোর নির্দেশ রয়েছে, বা কেউ জমি দান করলে সেখানে হতে পারে। কারও রায়তি সম্পত্তির উপর তা বানানো যাবে না। এমন কোন অভিযোগ থাকলে কাজটা বন্ধ রেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে।"

Balurghat: রায়ত জমিতেই অঙ্গনওয়াড়ি? বিডিও-র বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ বালুরঘাটে
বালুরঘাটে বিতর্ক

Follow Us

বালুরঘাট : সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অন্যের রায়তি সম্পতির উপর জোর পূর্বক অঙ্গনওয়াড়ির ভবন তৈরির অভিযোগ উঠল বালুরঘাটের বিডিও-র বিরুদ্ধে। এমনকী এই নিয়ে বিডিওর কাছে বিষয়টি জানাতে গেলে পরবর্তী সময়ে জমির মালিক কালিকৃষ্ণ সাহা রায়কে তৃণমূলের লোক বলে হুমকিও দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বালুরঘাটের বিডিও অনুজ শিকদারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বিডিও আরও বলেছেন, তিনি ওই জায়গাতেই অঙ্গনওয়াড়ির কেন্দ্রের জন্য ভবন তৈরি করবেন। এদিকে বিষয়টি জানার পরেই জমির মালিক কালিকৃষ্ণ সাহা রায় জেলাশাসক, এসডিও, ভূমি ও রাজস্ব দফতরের আধিকারিক সহ বালুরঘাট থানার আইসিকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। তাঁদের বক্তব্য, যে জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে, তার জমির মাপজোক করা হোক। মাপজোক করে যদি দেখা যায়, ভেস্ট জায়গা নয়, তাহলে আর তাঁদের কোন দাবি থাকবে না। এদিকে লিখিতভাবে পুরো বিষয় জানানোর পরও বালুরঘাটের বিডিও জোরপূর্বক ওই জায়গায় ভবন তৈরির কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ কালিকৃষ্ণ বাবুর। এদিকে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা সাফ জানিয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ির কেন্দ্র তৈরি করতে হবে ভেস্ট জমিতে। কারও রায়তি সম্পত্তির উপর ভবন তৈরি করা যাবে না।

জানা গিয়েছে, সরকারের নির্দেশ মোতাবেক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিভিন্ন ব্লকে বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, যার ভবনগুলি একদম নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। জেলায় মোট ১০০ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। এই রকমই একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বঙ্গি এলাকায়। বেশ কয়েক মাস আগে নতুন ভবনের কাজ শুরু হয় ওই এলাকায়। এদিকে নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি হতেই জায়গা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যে জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে, তা বালুরঘাট শহরের বিশ্বাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা কালিকৃষ্ণ সাহা রায় নিজের বলে দাবি করেছেন। এই নিয়ে তিনি বিডিওর কাছে কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।

এদিকে বিষয়টি জানানোর পর কিছুদিনের জন্য ভবন তৈরির কাজ বন্ধ থাকে। কিন্তু বিগত কিছুদিন ধরে জোরপূর্বক সেখানে ভবন তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ কালিকৃষ্ণ বাবুর। এই বিষয়ে অভিযোগকারী কালীকৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, আমি বিডিও-র কাছে দরখাস্ত নিয়ে গিয়েছিলাম। বিডিও বললেন, ওটা ভেস্ট জায়গা, ওখানে আমরা বাড়ি খবর। কিন্তু উনি আমার জমির উপর কেন বাড়ি করলেন। ওটা আমার রায়তি সম্পত্তি। কিন্তু বিডিও বললেন, আমি তৃণমূলের লোক। ওখানে আমার কাজ চলবে।”

এই বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা শুভ পালও বলেন, “ভেস্ট ল্যান্ড নয়, কালি কৃষ্ণ সাহা রায়ের জমিতেই অঙ্গনওয়াড়ির ভবনটা তৈরি হচ্ছে৷ কিন্তু ওই ভবন থেকে কিছুটা দূরেই ভেস্ট ল্যান্ড রয়েছে৷”

এবিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, “এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট নয় গোটা রাজ্যের সরকারি আধিকারিকরা নিজেদের তৃণমূলের লোক বলেই দাবি করছেন। একই ভাবে বিডিও অফিস ও থানাকে তৃণমূলের পার্টি অফিস ও দফতর করে রেখেছেন। সাধারণ মানুষদের ভুল বোঝাচ্ছেন তারা৷ প্রশাসনের লোক হলেও তারা তৃণমূলের লোক বলেই সাধারণ মানুষদের বলছেন৷ এই নিয়ে বিজেপি আগামীদিনে বড় আন্দোলনে নামবে।”

তবে বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা সুভাষ চাকি বলেন, “এমন কথা আমরাও শুনেছি। তবে প্রকৃতপক্ষে কী কথা হয়েছে, তা আমাদের কাছে আসেনি। আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। উনি তৃণমূল সরকারের কথা বলতে গিয়েছিলেন। সম্ভবত বাইরে সেই কথাটা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমরা ঘটনার উপর নজর রাখছি। আর যে জমি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, সেটি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সরকারি কাজে জোরের কোনও প্রশ্ন নেই। নির্দিষ্ট করা রয়েছে কোনটি ভেস্ট ল্যান্ড এবং কোনটি রায়ত। আমাদের আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, সরকারি জায়গাতেই বাড়িটি হবে। সরকারিভাবে সরেজমিনে খতিয়ে দেখে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা আধিকারিকরা নেবেন।”

এই বিষয়ে জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, এই নিয়ে কোনও অভিযোগ তিনি হাতে পাননি৷ বলেন, “আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। সরকারি অঙ্গনওয়াড়ির ঘর বা ভবন ভেস্ট ল্যান্ডে বানানোর নির্দেশ রয়েছে, বা কেউ জমি দান করলে সেখানে হতে পারে। কারও রায়তি সম্পত্তির উপর তা বানানো যাবে না। এমন কোন অভিযোগ থাকলে কাজটা বন্ধ রেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে।” অন্যদিকে বিডিও নিজেকে তৃণমূলের লোক বলা প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, তিনি শোনা-কথায় কিছু বলতে পারবেন না। এই অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে বালুরঘাটের বিডিও অনুজ শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কে কি বলেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই৷

Next Article