কুমারগঞ্জ : নাবালিকার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে না দিয়ে অন্যের সঙ্গে বিয়ে দেয় পরিবার। বিয়ের ২ মাসের মধ্যেই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী (Suicide) হল নাবালিকা গৃহবধূ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের পারিয়াল এলাকায়। মৃতার নাম সুমি পাল (১৭)। শনিবার বিকেলে পুলিশ (Police) দেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। তবে বাড়ির বউ যে নাবালিকা, তা না কি অজানা বলেই স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। তাঁদের দাবি, অনেক আগেই তার ১৮ বছর পার হয়েছে বলে মেয়ের পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, মৃত সুমি পালের বাপের বাড়ি উত্তর দিনাজপুর জেলার হাটকালী এলাকায়৷ গত ডিসেম্বর মাসে সুমির সঙ্গে কুমারগঞ্জ ব্লকের পারিয়াল এলাকার যুবক অসিত পালের বিয়ের কথা ঠিক হয়। অসিত পালের পরিবারের তরফেই বিয়ের প্রস্তাব আনা হয়। কিন্তু, শুরু থেকেই এই বিয়েতে আপত্তি ছিল ওই নাবালিকার। কিন্তু, তার আপত্তি পাত্তা দেয়নি তার পরিবার। একরকম জোর করেই অসিত পালের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যার ফলে বিয়ের পর থেকে অশান্তি বাড়তে থাকে দম্পতির মধ্যে। ওই নাবালিকা একাধিকবার বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা তার স্বামী ও বাবাকে জানায় বলেও জানা যাচ্ছে। কিন্তু, এরপরেও তার কথা শোনেনি পরিবার। অবশেষে বৃহস্পতিবার কীটনাশক খায় ওই নাবালিকা গৃহবধূ। বিষয়টি নজরে আসতেই তাকে চিকিৎসার জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। শনিবার দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
এবিষয়ে মৃতের স্বামী অসিত পাল বলেন, “বিয়ের আগে আমার স্ত্রীর অন্য কোথাও ভালোবাসা ছিল। তাই বিয়ের পরে সে চলে যেতে চেয়েছিল। বিষয়টি আমি ওই পরিবারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই সে কীটনাশক খেয়ে ফেলে।” এছাড়াও তার বয়স ১৮ হয়নি তা তাদের জানানো হয়নি বলে দাবি তাঁর৷ এ বিষয়ে মৃতের বাবা সারকাস পাল বলেন, “যার সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেম ছিল তাকে আমাদের পছন্দ ছিল না। বয়সে অনেক বড় ছিল। তাই আমরা এখানে বিয়ে দিয়েছিলাম। অনেক বুঝিয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকার কথা বলেছিলাম। কিন্তু, তারপরেও ও আত্মঘাতী হল। ভুলতে পারেনি ওর প্রাক্তনকে। বিয়ের পর থেকেই মনে হয় মানসিক অবসাদে ভুগছিল।”