বালুরঘাট : ছেলে সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteer)। তারই প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পিএইচই-র জল গ্রামে গ্রামে সরবারাহ না করার অভিযোগ অপারেটরের বিরুদ্ধে। অথচ অপারেটর সেই জল বাড়ি বাড়ি ও ট্যাপে না দিয়ে নিজের চাষের কাজে ব্যবহার করছেন। অভিযোগ, পানীয় জল (Drinking Water) দিয়ে পুকুরের মাছ চাষ করছেন ওই ব্যক্তি। এমন অভিযোগ তুলে রবিবার পিএইচইতে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখালেন শতাধিক গ্রামবাসী। রবিবার সকালে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নোকসা এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পিএইচই-র তালা খুলে দেওয়া হয়। যদিও পিএইচই-র পানীয় জল দিয়ে চাষ করা ও পুকুরে জল দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন পাম্প অপারেটর শ্যামল মণ্ডল। অন্যদিকে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে পিএইচই দফতর।
প্রসঙ্গত, বাড়ি বাড়ি ট্যাপের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করার জন্য ২০১৭ সালে নোকসা এলাকায় পিএইচই নতুন পাম্প বসায়৷ তারপর থেকে ওই মেশিন দিয়ে এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে জল দেওয়া শুরু হয়। অভিযোগ, সম্প্রতি পিএইচই-র পাম্প অপারেটর শ্যামল মণ্ডল বেশ কিছু গ্রামে ঠিকমতো পরিষেবা দিচ্ছেন না। বাড়ি বাড়ি জল না দিয়ে সেই জল নিজের চাষের কাজে লাগাচ্ছেন৷ পুকুরে মাছ চাষ করছেন। টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন জল। কেউ কিছু বলতে গেলে ছেলের কথা তুলে ভয় দেখাচ্ছেন। ছেলে সিভিক ভলান্টিয়ার, কেউ কিছু করতে পারবে বলেও হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন। তাঁর ছেলে সঞ্জয় মণ্ডল বালুরঘাট থানায় কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, বাবার জায়গায় পাম্পে মাঝেমাঝেই কাজ করেন তিনিও।
অভিযোগ, বিগত কয়েকদিন থেকে বেশ কয়েকটি গ্রামে জল পরিষেবা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা দেখেন চাষের জমিতে ওই জল ব্যবহার করছেন তিনি। এরপরই ক্ষুব্ধ জনতা আজ পিএচইতে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার পুলিশ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা পুলক দেবনাথ বলেন, “সমস্য়া অনেকদিনের। গ্রামে জল না দিয়ে সেই জল অন্য জমিতে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এখন তো দেখা যাচ্ছে পাম্প অপারেটর নিজেই টাকার বিনিময়ে জল বিক্রি করছেন।” যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অপারেটর শ্যামল মণ্ডল বলেন, “গ্রামবাসীরা অভিযোগ করতেই পারে। কিন্তু, পরিষেবা আমি ঠিকমতোই দিচ্ছি। কেউ কিছু বললে তো আর তাঁদের মুখ বন্ধ করতে পারব না। তবে যে সমস্ত অভিযোগ তুলছে সব মিথ্যা।” একই সুর ছেলে সঞ্জয় মণ্ডলের গলাতেও। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধেই পাল্টা তোপ দেগে তিনি বলেন, “সব মিথ্যা কথা। আমি কাজ করতে যাব কেন! বাবার কাজ বাবা করে। আর আমি প্রভাব খাটিয়ে কিছুই করিনি।” এ বিষয়ে মালদা ডিভিশনের পিএইচই-র মেকনিক্যাল বিভাগের আধিকারিক অনিমেষ চক্রবর্তী বলেন, “অভিযোগ পেতেই ওই এজেন্সিকে শোকজ করা হয়েছে।”