গঙ্গারামপুর: পঞ্চায়ের ভোট ঘিরে আরও একবার হিংসার সাক্ষী থাকল গ্রাম বাংলা। ভোটের দিন সকাল থেকেই চলল বোমা-গুলি। ছাপ্পা ভোটের অভিযোগও উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর ব্লকের সিংফরকায় ৩৭/১৬২ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধেই ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ। এর প্রতিবাদে স্থানীয়রা ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে দেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও বিজেপির বুথ সভাপতি ব্যালটে জল ঢালে। এর পরই তৃণমূল দুষ্কৃতীরা ওই বিজেপি বুথ সভাপতি অন্তু রায়কে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এই খবর পেয়ে বুথ সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
ঘটনা নিয়ে বিজেপির বুথ সভাপতি অন্তু রায় বলেছেন, “কারা সব ব্যালটে জল ঢেলে দিয়েছে। আমি দেখিনি। কিন্তু আমার বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল দুষ্কৃতীরা। বলছে আমি জল ঢেলেছি। আমার বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলছে। আমাকে খুন করে দেবে বলেছে। আপনারা যাওয়ার পর আমার যে কী অবস্থা হবে!” খবর পেয়ে ঘটনাস্থল আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ স্থানীয় জেলা পরিষদের প্রার্থী প্রদীপ সরকার। বুথ সভাপতির সঙ্গে দেখার পাশাপাশি তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। এ বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। সীমাহীন হিংসা। গোটা বাংলা দেখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বাংলায় কী কী ঘটছে। আমাদের বুথ সভাপতির বাড়িতে হামলা হয়। তাঁকে মারধর করেছে। খুনের হুমকি দিয়েছে। আমার বুথ সভাপতির কিছু হল দায়ী হবে এই জেলার পুলিশ প্রশাসন। ওই বুথেও পুনর্নির্বাচনের দাবি করব।”
পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীরা কী অবস্থায় রয়েছে তা জানতে সুকান্ত মজুমদারকে ফোন করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। সুকান্ত মজুমদার নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। ওই বুথ সভাপতি সহ তাঁর গোটা পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে জেলার নির্বাচনী আধিকারিকদের অভিযোগও করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেছেন, “গোটা গঙ্গারামপুর এলাকায় সুকান্ত মজুমদার নিজের কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে বেরিয়েছেন। তির ধনুক দিয়ে আদিবাসীদের নিয়ে বুথ দখলের চেষ্টা করেছেন। সিংফরকা বুথেও সুকান্ত মজুমদার যাওয়ার পরে ব্যালট বাক্সে জল ঢেলে দেওয়া হয়। বিজেপি বুথ সভাপতির বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। উল্টে বিজেপির তরফ থেকেই ভোট পর্ব অশান্ত ব্যালট বক্সে জল ঢেলে দেওয়া হয়৷”