Unnatural Death: ‘ঋণ শুধতে না পারলে মরে যাও’, মরলেন বধূ… ব্যাঙ্ককর্মীর দাবি, কেউ কখনও মরতে বলে!

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

May 29, 2022 | 11:16 PM

Hili: যদিও যে ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেখানকার এক কর্মীর দাবি, এরকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। অভিযোগ ভিত্তিহীন।

Unnatural Death: ঋণ শুধতে না পারলে মরে যাও, মরলেন বধূ... ব্যাঙ্ককর্মীর দাবি, কেউ কখনও মরতে বলে!
ঋতি অধিকারী। নিজস্ব চিত্র।

Follow Us

দক্ষিণ দিনাজপুর: ব্যাঙ্ক কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে কীটনাশক খেলেন এক গৃহবধূ। ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সে টাকা ফেরৎ দিতে পারছিলেন না। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্মীরা টাকার জন্য বাড়িতে যান। সেখানেই গৃহবধূকে বলেন, টাকা দিতে না পারলে সে ক্ষেত্রে মরে গেলেই একমাত্র সমস্ত টাকা মকুব হবে। পরিবারের অভিযোগ, এরপরই ওই বধূ কীটনাশক খেয়ে নেন। শুক্রবার এই কীটনাশক খেয়ে ওই গৃহবধূ ব্যাঙ্ককর্মীদের কাছে যান। সেখানেই তিনি পড়ে যান বলে পরিবারের দাবি। মৃত্যু হয় তাঁর। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলিতে এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও যে ব্যাঙ্কের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেখানকার এক কর্মীর দাবি, এরকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। অভিযোগ ভিত্তিহীন। এই ঘটনায় রবিবার অবধি থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ওই বধূর পরিবারের দাবি, সোমবার তারা হিলি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে।

২০২০ সালে লকডাউনের সময় স্থানীয় স্মল ফিনান্সের একটি ব্যাঙ্ক থেকে থেকে প্রায় ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার ত্রিমোহিনীর লালপুর এলাকার ঋতি অধিকারি (২৯)। তাঁর স্বামী প্রদীপ অধিকার পেশায় রাজমিস্ত্রি। পরিবারের দাবি, ঋতির পরিকল্পনা ছিল এই টাকায় স্বামী ব্যবসা করবেন। তারপর হাতে কিছু টাকা এলে ঋণ শোধ করে দেবেন। এদিকে যত দিন যাচ্ছিল ঋণের টাকা শোধ করতে নাকানিচোবানি খাচ্ছিল অধিকারী পরিবার। সুদ-সমেত প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হয়ে গিয়েছে বলে পরিবারের দাবি।

সাপ্তাহিক কিস্তিতে এই টাকা দিতে হয়। সম্প্রতি সেই কিস্তি দিতে না পারায় ব্যাঙ্ক কর্মীরা বাড়িতে টাকা চাইতে যান। অভিযোগ, সেখানেই ব্যাঙ্ক কর্মীরা ঋতিকে বলেন, টাকা দিতে না পারলে মরে যান। আত্মহত্যা করলেই লোনের টাকা মাফ হয়ে যাবে। এরপরই গত শুক্রবার কীটনাশক খেয়ে ফেলেন ঋতি। সেই অবস্থায় ব্যাঙ্ক কর্মীদের কাছে যান। বলেন, তিনি বিষ খেয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাঙ্কের কর্মীরাই ওই গৃহবধূকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। শনিবার রাতে সেখানেই মারা যান ঋতি। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হতে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। বালুরঘাট ও হিলি থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।

ঋতির স্বামী প্রদীপ অধিকারী বলেন, লোনের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই স্ত্রীকে আত্মহত্যা করার কথা বলে ব্যাঙ্কের কর্মীরা। অত টাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয় তাই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন স্ত্রী। এমনকী কীটনাশক খাওয়ার পর ব্যাঙ্কের কর্মীদের কাছেও যায়। ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানাবেন বলেন প্রদীপ।

নিহতের এক প্রতিবেশী কাজল দাস জানান, ওই গৃহবধূ এক লক্ষ টাকা লকডাউনের সময় ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু তা পরিশোধ করতে না পারায় বর্তমানে তা চার লক্ষ টাকায় গিয়ে পৌঁছয়। ঋণের টাকা কোনওভাবেই পরিশোধ করতে পারছিলেন না তিনি। এদিকে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাঙ্ক কর্মীরা বলেন হয় টাকা দিন না হলে আত্মহত্যা করুন। এরপরই ওই গৃহবধূ কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে এমন চাপ না দেওয়া হলে এই ঘটনা ঘটত না। ব্যাঙ্কের কর্মীরা রাতে এসে লোনের টাকা চেয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। সেই আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন গৃহবধূ।

যদিও এ নিয়ে অভিযোগ ওঠা ব্যাঙ্কের এক কর্মী মানিক হালদার বলেন, কিস্তির টাকা চাইতে গিয়েছিলেন তাঁরা গৃহবধূর মায়ের কাছে। এরপরই ওই মহিলা তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁদের কাজই কিস্তির টাকা তোলা। কিন্তু তাঁরা কখনও বলতে পারেন না কাউকে মরে যাওয়ার জন্য। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। হিলি থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করা হবে।

Next Article