বালুরঘাট: বাবা রাজনীতিতে মগ্ন হলেও, ছেলে কিন্তু ব্যস্ত অধ্যায়নে। তারই সুফল মিলল মাধ্যমিকে। বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র উদয়ন প্রসাদ। সে এবারে ৬৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যে তৃতীয় স্থান দখল করল। বালুরঘাট শহরের প্রাচ্য ভারতি এলাকার বাসিন্দা উদয়ন। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার বিষয়ে খুব আগ্রহী। কিন্তু পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রতিকূল হবার ফলে অনেক ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় তাকে। যদিও সেই প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে নিজের স্বপ্নকে জয় করতে সফল হয়েছে উদয়ন।
বাবা উমেশ প্রসাদ। রাজনৈতিক দল সিপিআইএমের সর্বক্ষণের কর্মী (হোলটাইমার) হিসাবে কাজ করে থাকেন। দল থেকে সামান্য মাসিক ভাতা পেয়ে থাকেন। (হোলটাইমাররা ৩ হাজার থেকে ৬ হাজারের মতো ভাতা পান। জেলাভিত্তিক তা আলাদা-আলাদা হয়ে থাকে) তা দিয়েই কোনও রকমে দিন যাপন করতে হয় এই পরিবারকে। পার্টির হোলটাইমার হওয়ার কারণে রাজনীতির কাজে সারা বছর ব্যস্ত থাকতে হয় উমেশবাবুকে। ছেলে কিংবা পরিবারকে তেমনভাবে দেখভাল করার সময় নেই তাঁর। সারাদিন রাজনীতির কাজে নিজেকে ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু ছেলে উদয়ন ব্যস্ত বাবার এই অবস্থাটা বুঝতে পেরে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য বড় হয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে পরিবারের পাশাপাশি প্রান্তিক এই জেলার সাধারণ মানুষদের জন্য কিছু করা। পাশাপাশি পরিবারের আর্থিক দুর্দশা খোঁচানো তাঁর অন্যতম লক্ষ্য।
উদয়ন প্রসাদ বলেন, “বড় হয়ে আমি ডাক্তার হতে চাই। তারপর প্রান্তিক এই জেলার সাধারণ মানুষদের জন্য ইচ্ছা আছে কিছু করার। আর্থিক প্রতিবন্ধকতা ছিল অবশ্যই। কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে এত বড় জায়গায় আসতে পেরেছি এর জন্য বাবা-মা স্কুলের শিক্ষক সহ গৃহ শিক্ষকদের ধন্যবাদ। পাশাপাশি উদয়ন আরও জানায়, আগামী দিনে লড়াই- বড় কঠিন। কিন্তু সমস্যা হবে না। এই বিশ্বাস নিয়ে সে এগিয়ে যাব।
এই বিষয়ে উদয়ন প্রসাদের বাবা উমেশ প্রসাদ বলেন, “ছেলে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল। আমি শুধু চেষ্টা করেছি এইমাত্র। সম্পূর্ণ নিজের কৃতিত্ব ওর। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক ও গৃহ শিক্ষকরা আমাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করেছে। আগামী দিনে ছেলে ডাক্তার হতে চায়। তার জন্য অর্থের প্রয়োজন। তবে সেই অর্থ প্রতিবন্ধকতা আসবে না।”