বালুরঘাট: বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যানের নিজের ওয়ার্ডেই বেদখল হচ্ছে শ্রীমন্তের খাঁড়ি। দিনের আলোতেই শহরের মধ্যে থাকা খাঁড়িটি বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সদর মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ তারপরেও শ্রীমন্তের খাঁড়ি বুজিয়ে ফেলার কাজ চলছেই। এ দিকে, এই বিষয়টি নজরে আসতেই এবার একযোগে সরব হয়েছেন বাম ও বিজেপি৷ যদিও, বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ পাননি বলেই জানিয়েছেন বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক কুমার মিত্র৷
বালুরঘাট শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লী ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে এক সময়কার বহুল প্রচলিত শ্রীমন্তের খাঁড়ি। ওই খাঁড়িতে মূলত এলাকার জল গিয়ে পড়ত। এছাড়াও স্থানীয়রা বিভিন্ন ধরনের নোংরা আবর্জনা ফেলত৷ এই খাঁড়িটি খুব বড় না হলেও না একদম ছোটও নয়৷ অভিযোগ, এক খাঁড়িটি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে তা ভরাট করে ফেলছে। মাটি ও বালি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে সেই খাঁড়ি। সম্পূর্ণ ভরাট হলেই সেখানে গড়ে উঠবে বহুতল বা অট্টালিকা। বেশ কিছু দিন আগে ওই খাঁড়িটি ভরাট করার চেষ্টা করা হয়৷ বিষয়টি নজরে আসতেই এনিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই সেই খাঁড়ি ভরাটের কাজ বন্ধ হয়। অভিযোগ কয়েকদিন আগে থেকে ফের একবার এই খাঁড়িটি ভরাট করার কাজ শুরু করেছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। প্রকাশ্য দিবালোকেই সেটি ভরাট করা হচ্ছে৷
এদিকে এই খাঁড়ি থেকে কিছুটা দূরেই বাড়ি বালুরঘাট পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান অশোক কুমার মিত্রের৷ ঠিক এই জায়গা থেকেই বিরোধীরা এবার সরব হয়েছেন। পুরসভার চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে এই কাজ চললেও এই কাজ বন্ধের বিষয়ে তিনি কোনও রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলেই অভিযোগ। পুরসভার চেয়ারম্যানের নাকের ডগায় বেআইনি ভাবে খাঁড়ি দখল হচ্ছে, কিন্তু তিনি তা বন্ধ করার জন্য কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে ওই ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সলির তথা আরএসপি নেতা প্রলয় ঘোষ বলেন, “খাঁড়ি বা জলাভূমি কখনও বসতবাড়ির জায়গা হয় না। এর আগে আমি কাউন্সিলর থাকাকালীন একবার খাঁড়ি ভরাটের চেষ্টা হয়েছিল। আমি প্রশাসনের সাহায্যে বন্ধ করেছিলাম। আমি যতদূর জানি চেয়ারম্যানের বাড়ির কাছেই ওই খাঁড়িটি। এরপরেও কীভাবে তা ভরাট হচ্ছে।শহরবাসীর কাছে বিষয়টি খুব দুখঃজনক।”
এবিষয়ে বিজেপি নেতা সুমন বর্মণ বলেন, “তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার মদতেই শহরের খাঁড়িগুলি দখল হচ্ছে। এর আগে আত্রেয়ী খাঁড়িতে এমন কাজ হয়েছে। এবারে চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে শ্রীমন্তের খাঁড়িতে হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে নামব। প্রশাসনকে জানাব।”
এবিষয়ে বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “এবিষয়ে আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ বা কিছুই জানায়নি। লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখব।”
অন্যদিকে এবিষয়ে বালুরঘাট মহকুমাশাসক সুমন দাশগুপ্ত বলেন, “এব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুরসভাকে জানিয়েছি।”