বালুরঘাট: দীর্ঘদিনের ভালবাসা। কিন্তু সেই ভালোবাসার মানুষটির বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্যত্র। এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থানার শরণগ্রাম এলাকার সত্যজিৎ বর্মন। অবশেষে অভিমানে প্রেমিকাকে ভিডিয়ো কল করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করল সত্যজিৎ। মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল ছড়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থানার শরণগ্রাম এলাকায়। এদিকে রাতে বিষয়টি নজরে আসতেই পরিবার এবং প্রতিবেশীরা সত্যজিতের দেহ সৎকারের জন্য পাশের শ্মশানে নিয়ে যান। সেখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। রাতের বেলা মৃতদেহ সৎকারে নিয়ে গেলেও গোটা দেহ ঠিক মতো পোড়েনি। সৎকার সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই বাড়ি চলে আসেন পরিবার পরিজনরা। এ দিকে বুধবার সকালে ওই শ্মশানে আধপোড়া দেহ নজরে আসে স্থানীয়দের। এর পরই পতিরাম ও তপন থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা দেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। যদিও এমন দেহের ময়নাতদন্তের পরিকাঠামো না থাকায় দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে পতিরাম থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, অনেক দিন আগেই পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছিল সত্যজিৎ বর্মণ (২২)। বর্তমানে বাবার সঙ্গে চাষের করতেন তিনি। পরিবার সূত্রে খবর, তিনি একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমে সম্পর্কে ছিলেন। যদিও মেয়ের পরিবারের তরফ থেকে সেই সম্পর্ক পছন্দ ছিল না। তাই মেয়ের প্রেমের বিষয়টি নজরে আসতেই মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। এদিকে প্রেমিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্য ছেলের সঙ্গে, এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেননি সত্যজিৎ। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। এমনকি আত্মহত্যার সময় প্রেমিকাতে ভিডিয়ো কলও করেছিলেন সত্যজিৎ। বিকেলে কাজ থেকে বাবা মা ফিরে এসে দেখেন তাদের ছেলের ঝুলন্ত দেহ। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
অন্যদিকে ঝামেলা এড়াতে পুলিশ ও প্রশাসনকে খবর পর্যন্ত দেয়নি স্থানীয়রা। রাতের অন্ধকারেই স্থানীয় শ্মশানে দেহ সৎকার করা হয়। শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে ভেবে সকলেই রাতেই বাড়ি চলে আসে। এদিকে এদিন সকালে স্থানীয়দের নজরে আসে অর্ধদগ্ধ দেহ পড়ে থাকার। যা জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে মৃত যুবকের বাবা চিত্ত বর্মণ জানিয়েছেন, স্ত্রী ও তিনি দুজনেই মাঠে কাজ করছিলেন। সন্ধ্যার দিকে কাজ থেকে ফিরে এসে দেখেন ছেলের ঝুলন্ত দেহ। কি হল ঠিক বুঝতে পারছেন না। তবে ছেলের একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে বলে শুনেছেন। সেই জায়গা থেকেই হয়তো এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁরা গ্রামের অশিক্ষিত মানুষ। তাই কি করতে হবে জানেন না। সকলে মিলে বলাতেই দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।