শিলিগুড়ি: “এত বড় বিপর্যয় শিলিগুড়িতে এর আগে কখনও হয়নি।” গোটা শিলিগুড়ি জলের তলায়। আর সেক্ষেত্রে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েই প্রশাসনকে বিঁধলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বললেন, “সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করব। শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের কাছে আগাম খবর ছিল কি না জানি না, থাকলে কী ব্যবস্থা নিয়েছিল?”
সোমবার সন্ধ্যা থেকে প্রবল বৃষ্টি। প্রায় গোটা শিলিগুড়িই জলের তলায়। কোনও কোনও রাস্তায় হাঁটু সমান জল। আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট বলছে, মাত্র তিন ঘণ্টায় ১৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টির নজির তৈরি হয়েছে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়িতে শপিংমল থেকে শুরু করে বাজারঘাট সবই জলের তলায়। এই নিয়ে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থপনা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শঙ্কর ঘোষ।
বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, “এতবড় দুর্যোগ এর আগে শিলিগুড়িতে হয়নি। আমাকে কখনও ডাকা হয়নি। ডাকলে যা করতে বলবে করব। এই কর্পোরেশনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বড় ড্রেনের ওপর দোকান বসানো হয়েছে। শাসক দল টাকা নিয়ে দোকান বসিয়েছে। তাই পলি তোলা যায়নি। তাতেই জল জমছে।”
শঙ্কর ঘোষ জানান, এর আগেরবার পুরবোর্ডে তিনি ছিলেন। তাঁর দাবি, সরকারের কাছে টাকা চেয়েছিলেন বারবার। কিন্তু পাননি। তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে সমালোচনা নয়। কর্পোরেশনের অবিলম্বে সক্রিয় হওয়া উচিত। বিধায়ক হওয়ার পর আমায় ডাকা হয়নি। আজও আমায় ডাকা হবে না। প্রশ্নটা রাজনৈতিক সদিচ্ছার।” তিনি জানান, ওপেন এবং ক্লোজ ড্রেনের প্রয়োজন। হাইড্রেনের ওপর দোকান বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির বড় দুর্নীতি আছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ফুলেশ্বরী জোড়া পানি পলি তোলার জন্য ৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু এক ইঞ্চি পলি সরানো হয়নি বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপত্র বেদব্রত দত্তের দাবি যে, “বিধায়ক এখন গেরুয়া শিবিরে গিয়ে তোপ দাগছেন, ওনার প্রাক্তন দলই এতদিন শিলিগুড়িতে ক্ষমতায় ছিল। আসলে বামেরা পরিকল্পনা করেনি বলেই এই অবস্থা। আমরা সবে দায়িত্ব নিয়েছি।”
শিলিগুড়ির বাসিন্দারা শিলিগুড়ি উঁচু জায়গা। এখানে জল জমে না, জমলেও নেমে যায়। কিন্তু সোমবারের মেঘভাঙা বৃষ্টি গত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাকে ভুল প্রমাণিত করেছে।