শিলিগুড়ি: শীতের মরসুম। মেলা-পার্বণের সময় তো এটাই। কিন্তু ওদিকে যে আবার করোনা আতঙ্ক! করোনাভাইরাসের নয়া স্ট্রেইন ওমিক্রন নিয়ে সাবধান হতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অতি সত্ত্বর ভ্যাকসিনের দুটো টিকা সম্পূর্ণ করতে বলা হচ্ছে। তা বলে ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকলে কি বইমেলায় (Book Fair) যাওয়া যাবে না? সেই কথা চিন্তা করেই এ বার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল শিলিগুড়ি বইমেলা কমিটি ও শিলিগুড়ি পুরনিগম।
গত ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শিলিগুড়ির বইমেলা। চলবে আগামী ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বইমেলার প্রথমদিন থেকেই চোখে পড়েছে জনসমাগম। অবশেষে সংক্রমণ এড়াতে ও কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ করতে বিশেষ উদ্যোগ নিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌতম দেব জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু অনেকেই এমন রয়েছেন যাঁরা দ্বিতীয় ডোজ়টি পাননি। তাঁদেরই টিকাকরণ করা হবে। বইমেলার মধ্যেই চলবে টিকাকরণ।
পুরসভা সূত্রে খবর, যাঁদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করে মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো হচ্ছে। চলছে প্রচার, মাইকিং। যদি কেউ পুরসভা আয়োজিত টিকাকরণ শিবির থেকে টিকা না নিতে পারেন, তাঁদের জন্য বইমেলাতেই থাকছে টিকাকরণের সুবিধা। বুধবার থেকেই চালু হচ্ছে এই পরিষেবা।
এদিকে বইমেলায় এসে টিকা পেয়ে খুশি গ্রাহকরাও। বই কেনার সঙ্গে সঙ্গে টিকাকরণও হয়ে যাচ্ছে। বই কিনতে আসা এক বইপ্রেমী গ্রাহকের কথায়, “বই তো কিনেইছি। সঙ্গে টিকাও পেয়েছি। এর আগে অনেকদিন ধরে লাইন দিয়েও টিকা পায়নি। সেদিক থেকে সুবিধাই হল। এভাবে যদি সকলের টিকাকরণ হয়ে যায় তাতে ক্ষতি কী!”
কিন্তু বই কেনার ভিড়ের পাশাপাশি, যদি টিকাকরণের জন্যও ভিড় বাড়তে থাকে, তাহলে তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? তাতে অবশ্য পুরপ্রশাসন জানিয়েছে, ভিড় এড়াতে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব রাখা যায়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। বইমেলা চত্বরে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক ও স্যানিটাইজার।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে জলপাইগুড়িতেও বইমেলা শুরু হয়েছে। সেখানেও টিকাকরণ কর্মসূচি করা হয়েছে। বইমেলায় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়েছে ভ্যাকসিন ক্যাম্প। মেলার প্রথম দিনেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত কোভিড ভ্যাকসিন ক্যাম্পে টিকা নিতে উপচে পড়ে ভিড়।
কমিটির তরফে যুগ্ম সম্পাদক অঞ্জন দাসের কথায়, “এবার বইমেলায় অনেকগুলো জিনিস নতুন করেছি। এবার বইমেলাতেও থিম সং করেছি আমরা। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল মেলা ক্যাম্পাসে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করেছি। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিন, দুটি টিকার ব্যবস্থা করেছি। তাতে সাড়াও মিলেছে দারুণ। যাঁরা সারাবছর বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাঁরা যাতে ভ্যাকসিন পান, তাই এই উদ্যোগ। তাছাড়া মেলা ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে মুখে মাস্ক অবশ্যই জরুরি। না থাকলে প্রবেশাধিকার মিলবে না। ”