শিলিগুড়ি: তবে কি পাহাড়ে এবার নয়া সমীকরণ ? সম্প্রতি কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন সদ্য হাত শিবিরে যোগ দেওয়া বিনয় তামাং। এরপর মঙ্গলবার বিনয় সহ হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ডস, হড়পা বাহাদুর ছেত্রীরাও বৈঠক করেন রাহুলের সঙ্গে। তারপর থেকেই হইচই শুরু হয় পাহাড়ে। তাহলে কি দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে কংগ্রেস? সেই প্রার্থী কি তাহলে বিনয়? এই জলঘোলার মধ্যেই বুধবার দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করল জেলা কংগ্রেস। তবে বিনয় প্রার্থী হলে তা ভালো ভাবে কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব মেনে নেবে না তাও মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
বিনয় তামাং প্রার্থী হতে পারেন সেই আশঙ্কা করছেন কংগ্রেসের রাজ্য নেতারা। এর প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার শিলিগুড়িতে বৈঠকে বসেছেন কংগ্রেসের পাহাড়ের নেতারা। গতকাল শিলিগুড়িতে জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় সামিল হন প্রত্যেকে। সরাসরি বিনয়ের বিরুদ্ধে কিছু না বললেও তাঁর দিল্লি সফর ও রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্টতাকে মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না তা বলাই যায়। যদিও, সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাঁদের দাবি, কংগ্রেসের যে কেউ রাহুলের কাছে যেতেই পারেন। কিন্তু প্রার্থী নিয়ে জেলা কমিটি নাম প্রস্তাব করবে। তারপর রাজ্য হয়ে সে নাম দিল্লিতে যাবে। তারপর প্রার্থী ঠিক হবে। বিনয় সবে দলে এসেছেন।
বুধবার শিলিগুড়িতে জেলা সভাপতি শংকর মালাকার স্পষ্ট বলেছেন, “পাহাড়ে আমাদের আসন চাই। তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে আমরা প্রার্থী দেব। জোট না হলে অন্য সঙ্গী খুঁজেই প্রার্থী দেব দার্জিলিঙে।” তবে সে প্রার্থী বিনয় তামাং কি না তা নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। তবে শঙ্কর মালাকার বলেন, “কংগ্রেস আলাদা গোর্খ্যাল্যান্ড রাজ্যের পক্ষপাতী নয়। ষষ্ঠ তপসিল বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা নিয়ে পাহাড়ের নেতারা দিল্লিতে রাহুলের দরবারে কথা বলছেন। বিজেপি কথা দিয়েও কথা রাখেনি। আমরা সব দিক ভেবেই নিজেদের গোছাচ্ছি।”
কংগ্রেস সূত্রেই জানা গিয়েছে, দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে জোট না হলে, আইএসএফ ও বামেদের সাহায্য নিয়েই এই আসনে জোট করে লড়াই এর প্রস্তুতি শুরু করবে কংগ্রেস। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় আইএসএফ প্রার্থী দিতে পারে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, প্রয়োজনে কংগ্রেস সেই প্রার্থীকেও সমর্থন করতে পারে। এর পাশাপাশি পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে পেলে তাদের জয়ের রাস্তাও সুগম হবে মনে করছে কংগ্রেস। কার্যত বলাই যায় পাহাড় দখল করতে মরিয়া যেন হাত শিবির।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ নভেম্বর কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয় তামাং। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে হাত শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নেন তিনি। আর বিনয় কংগ্রেসে যোগ দিতেই পাহাড়ে হাত শিবিরের শক্তি আরও বেড়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর যোগদানের পরই রাহুল গান্ধীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ পাহাড় রাজনীতিতে চর্চা আরও বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।