শিলিগুড়ি : রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন নির্বাচনে বামেরা কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও উল্টো ছবি শিলিগুড়িতে। এর আগে গত বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হন অশোক ভট্টাচার্য। সেই ধাক্কা সামলে উঠে পুরনিগমের নির্বাচনে ফের প্রার্থী হন অশোকবাবু। সেখানেও হারতে হয় তাঁকে। বামেদের হাতে থাকা শিলিগুড়ি পুরবোর্ড হাতছাড়া হয়। আর এবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনেও শোচনীয় পরাজয়। বাম নেতৃত্বের হাতছাড়া হল ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত স্তরে ২২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল জিতেছে। তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু। একটিও গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতার দখল নিতে পারেনি বামেরা।
একই ছবি পঞ্চায়েত সমিতিতেও। চারটি পঞ্চায়েত সমিতির সবক’টি জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র বিজেপি দশটি আসনে জয়লাভ করেছে। এছাড়া মহকুমা পরিষদের ৯টি আসনের মধ্যে আটটি জিতেছে ঘাসফুল শিবির। একটি দখল করেছে বিজেপি। কেন এই ফলাফল? বামেরা ক্ষয়িষ্ণু কেন? সেই প্রসঙ্গে সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “এই ফলাফল প্রত্যাশিত ছিল না। এটা আমাদের বিপর্যয়। আমরা আশা করেছিলাম গ্রাম বাংলার এই ভোটে আমরা ভাল ফলাফল করব। বুথ ভিত্তিক ফলাফলের তালিকা আমাদের কাছে এলে সেই তালিকা আমরা পর্যালোচনা করে দেখব।”
যদিও জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, “শিলিগুড়ি এখন আর বামেদের নয়। এখানে বামেরা শুধুই ইতিহাস। বাম নেতাদের এখানকার মানুষ বর্জন করেছে। ওদের উচিত এখন চুপ করে থাকা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আস্থা রেখেছেন গ্রাম বাংলার মানুষ।”
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা একটিও আসন জিততে পারেনি। বামশূন্য বিধানসভা গঠিত হয়েছে রাজ্যে। সেই জায়গা থেকে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বাম শিবির। পুরনিগমের ভোট হোক বা পুরসভার ভোট, সব ক্ষেত্রেই খুব স্লথগতিতে হলেও হাল ফিরছিল বামেদের। কিন্তু তারপর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নির্বাচনে ফের ধাক্কা। হোঁচট নয়, একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ল বামেরা। এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।