শিলিগুড়ি: করোনা এখনও নির্মূল হয়নি। তার মধ্যেই আবার ডেঙ্গির প্রকোপ। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের অবস্থা আরও খারাপ। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এর মধ্যে আবার দুঃসংবাদ। চলতি বছরে ডেঙ্গিতে প্রথম মৃত্যু উত্তরবঙ্গে। মৃতের নাম রোহিত খালকো। ওই যুবক খড়িবাড়ির বাসিন্দা।
কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা এসেছিলেন উত্তর কন্যায়। এখানে এসে জেলাগুলির পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জানিয়েছিলেন, মালদা ও ডুয়ার্সের বাগরাকোট এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে।তারা এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখেন।কিন্তু শিলিগুড়ির পরিস্থিতি খারাপ নয় বলেই জানিয়েছিলেন তাঁরা।পরিদর্শনের ঠিক দু’দিনের মাথায় এল ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু খবর।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য জানিয়েছে, শিলিগুড়ি মহকুমায় মোট ২২ জন আগে আক্রান্ত হলেও তাঁরা বর্তমানে সুস্থ। তবে খড়বাড়ির যে যুবক মারা গিয়েছেন চা বাগান অধ্যুষিত সেই খড়িবাড়ি এলাকায় কোথাও জমাজল রয়েছেন কি না তা সমীক্ষা করে দেখা হবে।
বস্তুত, কয়েকদিন আগে উত্তরবঙ্গে ক্রমাগত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চিন্তা প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘উত্তরের জেলাগুলিতে ডেঙ্গি বাড়ছে।’ তাই স্বাস্থ্য দফতরকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠতে। প্রয়োজন হলে মশারি বিতরণ করতেও তিনি বলেছেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ইতিমধ্যে ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিনজন আক্রান্ত সেখানে ভর্তি রয়েছেন বলে খবর। এদিকে, সব থেকে খারাপ অবস্থা জলপাইগুড়ির মাল মহকুমা ও ওদলাবাড়িতে।
গত পরশু পর্যন্ত ওদলাবাড়ি বাগ্রাকোট এলাকায় ডেঙ্গি পজ়েটিভ প্রায় ৪৬ জন। সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে খবর। ছাড়াও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী বাড়িতে রয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি বিশেষ দল এসেছে ওদলাবাড়ি এলাকায়। যাঁরা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে রয়েছেন তাঁদের ডেঙ্গি উপসর্গ রয়েছে কি না সেই বিষয়ে বাড়িগুলি পরিদর্শন করতে শুরু করেছেন তাঁরা। শুধুমাত্র ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছে বলে খবর।
এর আগে বাগরাকোট এলাকায় ২০১৮ সালের ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়ে গিয়েছিল ডেঙ্গি। এবার আবার ২০২২-এ পুণরায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। যার ফলে রীতিমত চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের, অনুমান করা হচ্ছে যে সকল বাড়িগুলির ভিতর বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে, সেখানেই ডেঙ্গির লার্ভা জন্ম নিচ্ছে। আর তার থেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডেঙ্গি রোধে মেডিক্যাল ক্যাম্প গঠন হয়েছে। চলছে রক্তের নমুনা পরীক্ষা। বাড়িগুলিতে মশা মারার স্প্রে করা হচ্ছে। তবে ঠিক কী কারণে এইভাবে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে তা জানতে পারা যায়নি। হাসপাতালে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।