শিলিগুড়ি: মায়ের ইচ্ছাপূরণে নাকি প্রভাবশালী তকমা কাজে লাগিয়েই পিএইচডি করেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিনিময়ে দুজন সহায়ককে বসানো হয় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পদে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর গ্রেফতারির পর এবার বিস্ফোরক দাবি করছেন বিরোধীরা। ২০১৩ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রেও ইউজিসির সমস্ত গাইডলাইন ভাঙা হয়েছিল বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। অভিযোগ, প্রভাবশালী তকমা কাজে সেক্ষেত্রে কাজে লাগিয়েছিলেন পার্থ। প্রভাব খাটিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে এসেছিলেন। কিন্তু কোর্স ওয়ার্ক করেননি তিনি।
সূত্রের খবর, মাত্র একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু অত্যন্ত কম সময় মাত্র এক বছর সময়ের মধ্যে নিজের পিএইচডি ডিগ্রি পেয়ে যান তিনি। পিএইচডি’র পরীক্ষক হিসেবেও এক্সহিলেন তাঁরই ঘনিষ্ট অধ্যাপক বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, অভিযোগ, সবটাই নিজস্ব গবেষণা হিসাবেই থিসিস জমা দিয়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ নিয়ে তৎকালীন উপাচার্য অরুণাভ বসু মজুমদার কিছু আপত্তি তুললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল এই বিষয়টিকে মান্যতা দেয়।
অন্যদিকে, পরবর্তীকালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওই উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয় পদ থেকে। পরবর্তীকালে, যে দুজন সহায়ক তাঁকে পিএইচডি পেতে গাইড হিসেবে সাহায্য করেছিলেন, সেই অনিল ভুঁইমালিকে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে বসানো হয়। অন্যদিকে পিএইচডিতে সহায়ক সঞ্চারি রায় মুখোপাধ্যায়কে বসানো হয় দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার পুরস্কার হিসেবেই নাকি দুই অধ্যাপককে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য হিসেবে বসানো হয়েছিল।
এবিষয়ে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, “এই ডিগ্রি জোর করে প্রভাব খাটিয়েই নিয়েছিলেন পার্থ। মানা হয়নি ইউজিসির নিয়ম। মন্ত্রী হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে ডিগ্রি নিয়ে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ পুরস্কার দেন দুই অধ্যাপককে।” তিনি আরও দাবি করেন, শুধু দক্ষিণবঙ্গ নয়, উত্তরবঙ্গেও বারবার যেতেন পার্থ৷ সেখানেও তাঁর বেআইনি লগ্নি রয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এই বিষয়টি যাতে ইডি তদন্ত করে দেখে, তার আর্জি জানিয়েছেন শঙ্কর ঘোষ।
অন্যদিকে সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “সবটাই বেনিয়ম। শিক্ষামন্ত্রী হয়েও শিক্ষার ন্যূনতম নিয়ম না মেনেই ডিগ্রি নেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সবাই সবটাই জানেন। এসবেরও তদন্ত হোক।”
এসব নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এটেছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন অনিল ভুঁইমালি ও সঞ্চারি রায় মুখোপাধ্যায়ও।