দার্জিলিং: পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল সাংসদ শান্তা ছেত্রীকে। সেই জায়গায় পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন সভাপতি হলেন এল বি রায়। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরের ঠিক আগেই শান্তা ছেত্রী পাহাড়ে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল। বিষয়টি জেলার শীর্ষ নেতাদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপেও জানিয়েছিলেন বলে কানাঘুষো ছড়িয়েছিল। আর এরপরই জিটিএ শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানের দিনেই শান্তা ছেত্রীকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। উল্লেখ্য, এর আগে নজরুল মঞ্চের এক কর্মিসভাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার সামনে বকাবকি করেছিলেন শান্তা ছেত্রীকে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন বলেও শোনা যাচ্ছিল।
দলীয় সূত্র মারফত এমনও জানা গিয়েছিল যে, পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনে দল ভাল ফল করেছিল, কিন্তু তার কৃতিত্ব শান্তার না মেলাতেই অভিমানে পদ ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। তৃণমূল সূত্র মারফত খবর, পাহাড়ের রাজনীতিতে সাম্প্রতিককালে কিছুটা কোনঠাসা অবস্থা হয়ে গিয়েছিল শান্তা ছেত্রীর। বিশেষ করে অনীত থাপাদের সঙ্গে ঝগড়া করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিরাগভাজন হয়েছিলেন শান্তা ছেত্রী। সূত্রের খবর, অনীত থাপাদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে মনোমালিন্য রয়েছে শান্তার এবং সেই বিষয়টি অনীত থাপা জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এরপরই দেখা যায়, সভার মধ্যেই শান্তাকে ধমক দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অনিত থাপাদের সঙ্গে এই অশান্তি এবং মনোমালিন্য একেবারেই মেনে নিচ্ছেন না তিনি।
পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণে এখন অনিত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে তৃণমূলের। সদ্য সমাপ্ত জিটিএ নির্বাচনে পাহাড়ে দাপট দেখিয়েছে অনিত থাপার দল। GTA-র ৪৫ টি আসনের মধ্যে ২৬ টি আসনই জিতেছে অনিত থাপার দল। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে বন্ধু দলের সঙ্গে সম্পর্ক কোনওভাবেই খারাপ করতে চাইছে না তৃণমূল শিবির। শান্তা ছেত্রীকে তৃণমূলের হিল ইউনিটের সভানেত্রীর দায়িত্ব থেকে সরানো, সেই ভাবনারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশ।