শিলিগুড়ি: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর থেকেই শিক্ষাক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। শুধু প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তো উঠেছেই। অভিযোগ উঠছে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ নিয়েও। এবার অভিযোগ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন কলেজে শিক্ষাকর্মী এবং বিভিন্ন অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নিয়োগ সংক্রান্ত অডিটের দাবি তুললেন অধ্যাপকদের একাংশ।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে বিভিন্ন শিক্ষাকর্মী ও অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম, বেনিয়ম এবং স্বজনপোষণ চলেছে। প্রতিবাদ করলে নানা অছিলায় শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের। বহু ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তাঁরা। ফলে সবমিলিয়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকেও তদন্তের আওতায় আনার দাবি তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ।
জলপাইগুড়ি আনন্দ চন্দ্র কলেজের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়। তাঁর অভিযোগ, “আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান ছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকেই পড়াশুনো করে অধ্যাপনা করছি জলপাইগুড়ির কলেজে। কিন্তু ২০১৮ তে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে। সে সময় যোগ্য ও মেধাবীদের অনেকেই ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। কাউকে আবার মেসেজ পাঠিয়ে ডাকা হয় ইন্টারভিউ বোর্ডে। এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলাম ছয় অধ্যাপক। সে মামলা এখনও চলছে।”
এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতির সভাপতি সমর বিশ্বাসের বক্তব্য, “গত কয়েক বছরে ব্যাপক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ হয়েছে এখানে। এসব নিয়ে অডিট হলেই সব সামনে চলে আসবে। প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ নিয়োগের ক্ষেত্রে বহু মেধাবী প্রার্থীকে বঞ্চিত করে চাকরি পেয়েছেন প্রভাবশালীদের লোকজন। শিক্ষাকর্মী ও অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার অফিসের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক। তাহলেই সবটা স্পষ্ট হবে।”
যদিও এ বিষয়ে তৃণমূল প্রভাবিত উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাকর্মী সমিতির সম্পাদক লালন চৌধুরীর পাল্টা বক্তব্য, “যারা অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের আত্মীয়রা চাকরি পাননি বলেই চাপে ফেলতে এসব বলা হচ্ছে। এতদিন চুপ ছিলেন কেন? আসলে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতেই এসব বলা হচ্ছে। অডিট হলে সবটাই সামনে আসবে। আমরাও চাইছি অডিট হোক। তবে শুধু তৃণমূল আমল নয়, বাম আমলের নিয়োগকেও এর আওতায় আনা হোক।”