ডুয়ার্স: ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও মৃত শাবককে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে মা হাতি। এক মর্মান্তিক দৃশ্য বলেই উল্লেখ করেছেন ডুয়ার্সের বাসিন্দারা। রেড ব্যাঙ্ক চা বাগানে দেখা যাচ্ছে একদল হাতি দাঁড়িয়ে রয়েছে মৃত শাবককে নিয়ে। বনকর্মীরা মনে করছেন, শাবককে নিয়ে আর এগোতে পারছেন না ঠিকই, তবে তারা কোনও ভাবেই ওই শাবককে ছেড়ে যেতে চাইছে না। শুক্রবারই দেখা যায়, মৃত একটি হস্তি শাবককে শুঁড়ে পেঁচিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হাতি। আর সেই হাতিই এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে চা বাগানে।
শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে নিয়েই মা হাতি অপেক্ষা করছিল। রাতে তার চারপাশে এসে দাঁড়ায় ৩০ থেকে ৪০ টি হাতির একটি দল। রাত পেরিয়ে সকাল হয়, ফের সেই একই দৃশ্য দেখা যায়। শনিবার সকালেও মৃত শাবককে মুখে নিয়ে এদিক ওদিক চলাফেরা করতে দেখেন চা বাগানের শ্রমিকরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সম্ভবত বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত্যু হয়েছে হস্তিশাবকের। যদিও শুক্রবার সকালে শাবক হাতিকে শুঁড়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নজরে পড়ে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ বিভাগ ও ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীরা। ঘটনাস্থলে ছিলেন এডিএফও জন্মেঞ্জয় পাল ও রেঞ্জার শুভাশিস রায়।
শনিবার দুপুরেও সেই মৃত শাবককে আগলে রেখেছে মা হাতি। আর মা হাতির সঙ্গ দেওয়ার বাকি হাতিরাও তাকে ছেড়ে আর জঙ্গলে ফেরেনি। কতক্ষণে মা হাতি শাবককে ছাড়বে এবং দলটি জঙ্গলে ফিরে যাবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন বনকর্মীরা। এখনও ঘটনাস্থলে নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা। এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে সেই নজরদারি চালানো হচ্ছে। চা বাগানের কর্মীরা বলছেন, বন্যপ্রাণী হাতির সন্তানের প্রতি স্নেহ, ভালোবাসা হয়তো হার মানাবে মানুষকেও। এরকম দৃশ্য এর আগে দেখা যায়নি বলে দাবি স্থানীয়দের। শুক্রবার সকালে অন্তত আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় ওই মা হাতি। শুঁড় থেকে বারবার পড়ে গেলেও মৃত শাবককে একাই টেনে নিয়ে যান তিনি।